রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত টেকসই সমাধানের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে ১৮তম পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের (ইএএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘এই (রোহিংস) সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব। নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে আরও বিলম্ব এবং মানবিক সহায়তার ঘাটতি সমগ্র অঞ্চলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু সংকটের সপ্তম বছরেও কোনো সমাধান চোখে পড়ছে না, বরং বাংলাদেশকে প্রান্তসীমায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে এবং আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হয়ে এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চায়।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ট্রান্স-ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অনেক খাত রয়েছে, যেখানে আসিয়ান ও বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে পারে। আমরা যদি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের মর্যাদা পাই, তাহলে বাজার, আঞ্চলিক একাত্মকরণ, জ্ঞান বিনিময় ও সর্বোত্তম অনুশীলন, উন্নত আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধা হবে।’
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘এই মর্যাদা উভয় পক্ষের জন্য যথেষ্ট সুযোগ উন্মুক্ত করবে এবং আসিয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে উন্নত করবে।’
ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ফোরামে বিকশিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এটি ছয়টি অগ্রাধিকার এবং আরও বেশি সম্ভাবনার দুটি ক্রস-কাটিং বিষয়সহ সহযোগিতার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেছে।’
মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘শতাব্দীকাল থেকে বাণিজ্যে সংযুক্ত অঞ্চলটি এখনও বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রবাহের কেন্দ্রে রয়েছে। আইওআরএ বেশির ভাগ উদীয়মান সংযোগ বিকল্পগুলো থেকে সুবিধা পেতে পারে এবং আসিয়ান এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ তার সভাপতিত্বকালে ইন্দো-প্যাসিফিকের ওপর আইওআরএ আউটলুক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আইওআরএ একটি ন্যায্য, ন্যায়সঙ্গত, টেকসই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করবে। যা স্থিতিশীল আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খল তৈরি করার সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সহযোগিতা বাড়াবে।’
পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন (ইএএস) হলো একটি আঞ্চলিক ফোরাম, যা আসিয়ান প্লাস সিক্স প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে পূর্ব এশীয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়, দক্ষিণ এশীয় ও মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৬টি দেশের নেতাদের নিয়ে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালে ষষ্ঠ ইএএসে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৮টি দেশকে সদস্যপদ দেওয়া হয়। সংস্থাটির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন ২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হয়।