নানা কারণেই সংবাদপত্র আজ ক্ষতির সম্মুখীন : ডিএফপি ডিজি
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক (ডিজি) স ম গোলাম কিবরিয়া বলেছেন, ‘শুধু অনলাইন নিউজ পোর্টালে লোকজন সংবাদ পড়েন শুধু এ কারণেই নয়, নানা কারণেই দেশের সংবাদপত্র অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন।’ আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএফপির ডিজি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পালনকালে দেখেছি, করোনা মহামারির সময় চিকিৎসকরা এটি ছড়ানোর কারণ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছিলেন না। যে কারণে আমি নিজেও এক সময় বাসায় পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দিয়েছি। এভাবে অনেকেই তখন বাসাবাড়িতে পত্রিকা রাখেনি। করোনা কাটিয়ে উঠার পর শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। বেড়ে গেল কাগজের দাম। সেটিও একটি কারণ। যে কারণে পত্রিকাগুলো এখন কঠিন অবস্থা পার করছে।’
ডিএফপির ডিজি আরও বলেন, দেশে যখন অনেক টেলিভিশন চালু হলো, তখন আমরা মনে করেছি পত্রিকাগুলো পড়ার জন্য পাঠক কমবে এবং বিক্রি কম হবে। কিন্তু তা হয়নি, পত্রিকাগুলো আবার নিজেদের অবস্থানে এসেছে। এখন যখন অনলাইন নিউজ পোর্টালে মানুষ সংবাদ পড়ছে, আমরা মনে করেছি পত্রিকার জন্য এটি ক্ষতির বিষয়। এটিও ঠিক নয়। পত্রিকাগুলো আবার নিজের অবস্থানে আসবে। যারা নিয়মিত বই পড়েন, তাঁরা বুঝতে পারবেন অনলাইনে পড়া আর বাস্তবে বই পড়া কিন্তু এক নয়।’
পত্রিকায় সংবাদ ছাপা সম্পর্কে ডিএফপির ডিজি বলেন, ‘আমি দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। সম্প্রতি গাজীপুর জেলায় গিয়ে দেখলাম তাদের পত্রিকাগুলোতে জাতীয় সংবাদ দিয়ে হেডলাইন এবং ফোকাস করছে। স্থানীয় সংবাদকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তার মানে তারা এসব পত্রিকা ঢাকা থেকে ছেপে প্রকাশ করছে। জাতীয় সংবাদের জন্য জাতীয় পত্রিকা রয়েছে। সেগুলো পাঠক পড়ছে। কিন্তু বিপরীতে চাঁদপুরে এসে দেখলাম এখানে বেশ কয়েকটি পত্রিকা এবং এসব পত্রিকায় খুবই গুরুত্বসহকারে স্থানীয় সংবাদগুলো ছাপা হয়েছে। চাঁদপুর প্রেসক্লাব ও এখানকার সাংবাদিকরা অনেক সমৃদ্ধ। এ জেলার রাজনৈতিক নেতারাও জাতীয়ভাবে বিভন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’
‘বিজ্ঞাপনের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। পত্রিকা ছাপানোর খরচ অনেক বেড়েছে। বিজ্ঞাপনের দর আগেরটাই রয়েছে। এসব বিষয়গুলো সমন্বয় করা হবে’ মন্তব্য করে ডিজি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিভিন্ন কথা উঠে এসেছে। এর মধ্যে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপনের বকেয়া সম্পর্কে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব। সরকারি বিজ্ঞাপনের বকেয়া পরিশোধ করার চেষ্টা করব। আমার সঙ্গে আপনাদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।’
‘আপনারা যে পত্রিকা ছাপান এগুলোর কপি আমাদের ডিএফপিতে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু এগুলো অনেকক্ষেত্রে জমা হয় না মন্তব্য করে ডিজি বলেন, ‘আপনারা আমাদের কাছে যখন কুরিয়ার করে পাঠান, তখন কুরিয়ারের পাঠানো প্রেরকের রশিদ কপি জমা রাখবেন। কোনো সময় পত্রিকা না পৌঁছালে তখন আমরা তল্লাশি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারব। আমাদের অফিসের কেউ অসহযোগিতা করলে তাঁর বিরুদ্ধে তখন ব্যবস্থা নিতে পারব।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পরিচালক (বিজ্ঞাপন ও নিরীক্ষা) রোকসানা আক্তার।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এ এইচ এম আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন বাশার, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন।
মতবিনিময় সভায় প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।