বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) বাংলাদেশের বাস্তবতার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।’

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের আধুনিকীকরণের যাত্রায় ভিশন-২০৪১ এবং সোনার বাংলা স্বপ্নের সঙ্গে সবচেয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক অবশ্যই একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আলোকে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা করবে।’

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আধিপত্য খোঁজার কোনো কারণ নেই, কারণ এতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ঐতিহ্য নেই এবং সম্প্রসারণ ও লুণ্ঠনের কোনো উপাদান নেই।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ মানবজাতির একটি অভিন্ন ভবিষ্যতসহ একটি সম্প্রদায় গঠনের লক্ষ্যে চীনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন এবং প্রতিবেদন উন্মোচনকালে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ-চীন চেম্বার অব কমার্স (বিসিসিআই) এবং চায়না এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (সিইএবি) সহযোগিতায় বাংলাদেশে চীনের দূতাবাস ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ : অ্যাচিভমেন্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ, যারা চীনের পরিকল্পিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগ দিয়েছে। গত সাত বছরে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রেরণা জুগিয়েছে এবং বাংলাদেশিদের জীবনযাত্রার উন্নতি করেছে।’

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘সামনের দিকে তাকালে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ শক্তিশালী প্রাণশক্তি রপ্ত করবে এবং চীন ও বাংলাদেশের জন্য সুযোগ ও সমৃদ্ধির পথ হয়ে উঠবে।’

নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিআরআইয়ের সম্ভাব্যতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের একটি সমন্বিত নীতি কাঠামো প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর সহজতর করার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।  

এতে বলা হয়েছে, ‘কৌশলগতভাবে বিআরআই সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে, বাংলাদেশ রূপান্তরমূলক এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করতে পারে, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কার্যনির্বাহী সংক্ষিপ্তসারে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিদ্যুৎ, পরিবহণ এবং লজিস্টিকসের উন্নতির সঙ্গে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘বিআরআইয়ের সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে বাংলাদেশের উচিত অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেওয়া। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং বাণিজ্য প্রতিযোগিতা ও দক্ষতা বাড়াতে সড়ক, রেলপথ ও জ্বালানি সুবিধার মতো অবকাঠামোগত উন্নয়নকে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’