নির্বাচন আদৌ হবে কি না, এখনই বলতে পারব না : ইসি আনিছুর
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘নির্বাচন আদৌ হবে কি হবে না, এখনই বলতে পারব না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হবে না হবে কেউ বলতে পারছি না। আমরা আশা করি যে একটা ভালো পরিবেশ হবে। পরিস্থিতি ভালো হোক বা মন্দ হোক, যেটাই হোক তখন কিন্তু আমাদের একার কিছু করার থাকবে না। সে ক্ষেত্রে ভোটার উপস্থিতি, ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোরও এগিয়ে আসতে হবে। যদি সমঝোতা হয় তাহলে পরিস্থিতি একরকম হবে। আর সমঝোতা না হলে পরিস্থিতি অন্য রকম হবে। সেটি নির্ভর করবে তখনকার পরিস্থিতির ওপর। আমরা এখনই কিছু আগ বাড়িয়ে বলতে পারব না। যে যা-ই বলুক পরিস্থিতির উন্নতি হোক—এটাই আমরা আশা করি।’
আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের অনুকূলে পরিবেশ আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আনিছুর এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, আমরা তো এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পরিস্থিতি দেখছি না যে, আমাদের সামনে কোনো বাধা-বিপত্তি আছে। নির্বাচনের এখনও বেশ সময় আছে। নির্বাচনের তফসিল দেওয়ার আরও সময় আছে। সামনে বড় ধরনের কোনো বাধা দেখছি না।
ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে আনলে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ওই সময় পরিবেশ কি হবে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো পরিবেশ থাকে কি থাকে না, এইটা তো আমি এখনই বলতে পারব না। কাজেই সেটার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
মো. আনিছুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হবে, না হবে কেউ বলতে পারছি না। কাজেই আমরা আশা করি যে একটা ভালো পরিবেশ হবে। পরিস্থিতি ভালো হোক বা মন্দ হোক, যেটাই হোক তখন কিন্তু আমাদের একার কিছু করার থাকবে না। সেক্ষেত্রে ভোটার উপস্থিতি, ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য, রাজনৈতিক দলগুলোরও এগিয়ে আসতে হবে। যদি সমঝোতা হয় তাহলে পরিস্থিতি একরকম হবে। আর সমঝোতা না হলে পরিস্থিতি অন্যরকম হবে। সেটি নির্ভর করবে তখনকার পরিস্থিতির উপর। আমরা এখনি কিছু আগ বাড়িয়ে বলতে পারব না। যে যেটাই বলুক পরিস্থিতির উন্নতি হোক, এটাই আমরা আশা করি।
ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে মো. আনিছুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি তখন কি হবে এখন তো আমরা বলতে পারছি না। পরিস্থিতি যদি ভালো থাকে তাহলে এক রকমের, আর পরিস্থিতি ভালো না থাকে তখন সার্বিকভাবে নিরাপত্তারই একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটার, সামগ্রী (নির্বাচনি সামগ্রী), ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ সামগ্রিক বিষয়ে ব্যবস্থাটার মধ্যে আসতে হবে। এখনি আমরা এই কথা না বলি। দেখি কি হয়। এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি একটি সমঝোতা, সমাধানের দিকে যেতে পারে। যদি না যায়, তখন পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আমরা ব্যবস্থা নেব।
মো. আনিছুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের সংলাপ সেগুলো শেষ করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি দেশ ও জাতির চিন্তা করে সমঝোতার দিকে যাক। আমরা কেউ পিছনের দিকে যেতে চাই না। আমরা এগিয়ে যেতে চাই। কাজেই এগিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা সবারই দায়িত্ব। আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব আরও বেশি। কারণ তারাই ভোটের মাঠে থাকবে। কাজেই তাদের জনগণ ও দেশের কথা চিন্তা করা উচিৎ।
মো. আনিছুর রহমান আরও বলেন, আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচনি সামগ্রী পাঠানো থেকে শুরু করে নির্বাচনের সবকিছু এগিয়ে রাখছি যে আমরা নির্বাচন করতে পারব। এখন তো আমি এ কথা বলতে পারব না যে নির্বাচন আদৌ হবে কি হবে না। সেটি পরিবেশ পরিস্থিতির উপর তখন বোঝা যাবে কী হবে না হবে সেটা। তবে সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন করা ছাড়া আমাদের কোনো গত্যন্তর নাই। যখন নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি হবে তখনই আমরা সেটি সম্পর্কে বলতে পারব। এই মুহূর্তে কিছু বলার নেই।
মো. আনিছুর রহমান বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল প্রত্যেকেই যাতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সেটিই আবেদন থাকবে। জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে, অবাধে, সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সেজন্য সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের আহ্বান। আমার ব্যক্তিগত আহ্বান, আমাদের কমিশনের আহ্বান। সবাই এগিয়ে আসুক। নির্বাচনি পরিবেশ সৃষ্টি করুন।
অপর প্রশ্নের জবাবে মো. আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনায় আমাদের কাজগুলো কী কী আছে, কী করব না করব এখানে বলা আছে। ভোটের পরেও এবার আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তা বাহিনী মাঠে থাকে সে রকম একটা প্রস্তাব রেখেছি। আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞা দেওয়া আছে। আমাদের পরিকল্পনায় আছে যে, যদি প্রয়োজন হয়, যদি নির্বাচন উত্তর কোনো সহিংসতা ঠেকানো যায়। সে জন্য যাতে মাঠে থাকে।
মো. আনিছুর রহমান আরও বলেন, আরপিওতেই বলা আছে ভোটের ১৫ দিন পর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আপনারা রাখতে পারেন। আপনাদের পরিকল্পনা কী? কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন উত্তর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রাখবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে ১৫ দিন পর্যন্ত আমরা মাঠে রাখব, যদি প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের দিনই শেষ হয়ে গেলো না, নির্বাচনের পরেও কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক সহিংসতা হয়, সেটি যাতে এড়ানো যায়। সেই জন্য যাতে তারা এলার্ট থাকে, এটাই আমরা চাইব এবং সে কারণেই আমাদের প্রস্তুতি।
লম্বা সময় রেখে অর্থাৎ সময় বেশি রেখে তফসিলের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আনিছুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। লম্বা দিলে যেমন সুবিধা আছে, তেমন অসুবিধাও আছে। আবার কম দিলেও সুবিধা, অসুবিধা আছে। কাজেই এমন কিছু করব না যাতে আমরা প্রশ্নের মুখে পড়ি।
ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে ইসি বলেন, ‘পরিস্থিতি যদি ভালো থাকে তাহলে একরকমের, আর পরিস্থিতি ভালো না থাকে, তখন সার্বিকভাবে নিরাপত্তারই একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটার, সামগ্রী (নির্বাচনী সামগ্রী), ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাসহ সামগ্রিক বিষয়ে ব্যবস্থাটার মধ্যে আসতে হবে। এখনই আমরা এই কথা না বলি। দেখি কী হয়। এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি একটি সমঝোতা, সমাধানের দিকে যেতে পারে। যদি না যায়, তখন পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আমরা ব্যবস্থা নেব।’