শকুন ও রাজনীতির কাক থেকে দেশ বাঁচাতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশটা যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। আর সেই শকুনের সহযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতির কাকেরা। এই শকুন আর রাজনীতির কাকদের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করতে হবে।’
শনিবার (২১ অক্টোবর) বন্দরনগরী চট্টগ্রামের শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান ও কৃতী শিক্ষার্থী সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। চট্টগ্রাম জেলা বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে বিএনপি গঠনের সময় বিভিন্ন দলের নেতারা কাকের মতো জড়ো হয়েছিলেন। তারা রাজনীতির কাক। বিদেশি শকুনের দৃষ্টি যখন দেশের ওপর পড়েছে, তখন রাজনীতির কাকেরা তাদের সহযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বিদেশিদের দিকেই তাকিয়ে থাকে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৮ তারিখ (শনিবার) নাকি বিএনপি সরকারের পতনযাত্রা শুরু করবে। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টন অফিসের সামনে থেকেও সরকারের পতনযাত্রা শুরু করতে চেয়েছিল, সেটি গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়ে মারা পড়েছিল।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এবারও সরকারের বিরুদ্ধে পতনযাত্রা শুরু করতে গিয়ে বিএনপি নিজেদের পতনযাত্রা শুরু করবে এবং যমুনা কিংবা বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে ডুবে যাবে। আর চট্টগ্রামে করলে কর্ণফুলী নদী কিংবা বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হবে। আসলে ২৮ তারিখে বিএনপি একটা বড় পিকনিক করতে চায়। আমরা পিকনিক থেকে ওদেরকে বুড়িগঙ্গায় নৌকা বাইচে পাঠিয়ে দেব, ইনশাল্লাহ।’
নিজ দলের পরিচয় তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনতা ও রাজপথের দল। আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই, সংগ্রাম করার জন্য। ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে বিরোধী দলে থেকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। আমরা জানি রাজপথে কাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বোরকা পড়ে হাইকোর্টে জামিন নিতে হাজির হন, কারো ভেলকিতে গর্তে ঢুকে যান, সমাবেশে গিয়ে পিকনিক করেন, তারা কতটুকু আন্দোলন করবেন, আমরা জানি।’
ফিলিস্তিন ইস্যুতে আবারও বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফিলিস্তিনে শিশুহত্যা, হাসপাতালে বোমা হামলায় ৮০০ মানুষ হত্যা, গির্জায় হামলা করে ১৮ জনকে হত্যা, এভাবে প্রতিদিন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রতিবাদে সমগ্র বিশ্ব যখন মুখর, তখন শকুনরা নাখোশ হতে পারে সেই ভাবনায় বিএনপি কোনো কথা বলে না। শকুনরা দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে নিলেও বিএনপি নিশ্চুপই থাকবে। তারা আবার দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখে। এদের হাতে দেশটাকে তুলে দেওয়া যাবে না। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
শিশু-কিশোরদেরকে উন্নত মানবিক রাষ্ট্রের ধারণা দিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিশুদেরকে অত্যন্ত পছন্দ করতেন। শিশু শেখ রাসেল ছিল মেধাবী ও মানবিক। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্য-আলোচনায় আপনারা সেটা শুনেছেন। আমরা উন্নত রাষ্ট্র চাই, একইসঙ্গে চাই মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে। রাস্তায় দামি গাড়ি চলবে, আর রাস্তার পাশে কোনো অসহায় মানুষের প্রতি কেউ ফিরেও তাকাবে না, এমন রাষ্ট্র আমরা চাই না।’
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি জাবেদ জাহাঙ্গীর টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিয়া মনসফ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মনিরুজ্জামান লিটন, সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম নওশের আলী, সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার উপদেষ্টা মোহাম্মদ আকতার হোসেন খান, সাদাত আনোয়ার সাদী, পৃষ্ঠপোষক হেলাল মোহাম্মদ নূরী, লায়ন আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য আ ম ম দিলশাদ ও চট্টগ্রাম উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন বাবুল।