ঘূর্ণিঝড় হামুনের কোনো প্রভাব নেই মোংলায়
ঘূর্ণিঝড় হামুনের কোনো প্রভাবই পড়েনি মোংলা বন্দরসহ সংলগ্ন সমুদ্র ও সুন্দরবন উপকূলে। আজ মঙ্গলবার পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর এক ফোঁটাও বৃষ্টি ঝরেনি।
সকাল থেকে মেঘলা ও কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় সেই চিত্র। দুপুরের পর থেকে ফাঁকে ফাঁকে আকাশে দেখা মেলে সূর্যের। এরপর বিকেল গড়াতেই রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করে।
ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা কিংবা সন্ধ্যার পরপর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হনলেও তাঁর কোনো প্রভাব পড়েনি মোংলা এলাকায়। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের স্থলভাগে হানা ও অতিক্রমকালে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তা মূলত পরিলক্ষিত হয়নি মোংলার উপকূলে। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এখানকার আবহাওয়া অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক। দুপুরে জোয়ারে নদীর পানিও ছিল স্বাভাবিক, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাড়েনি পানিও। যদিও জলোচ্ছাসের পূর্বাভাস ছিল আবহাওয়া অফিসের।
পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেতের ফলে সাধারণত আবহাওয়া যতটা বৈরী হয়ে উঠার আশংকা ছিল তার কোনো কিছুই হয়নি। ফলে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণের কাজ ছিল স্বাভাবিক।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন বিভাগ) ক্যাপ্টেন আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব এলার্ট-১ জারি করা হয়। এ ছাড়া বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত ও চলাচলকারী নৌযানগুলোকে নিরাপদে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী এলার্ট জারিসহ বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা কিংবা বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে কোনো দিন পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর বৃষ্টি-বাতাসহীন আবহাওয়া দেখেনি এ এলাকার মানুষ। সাধারণত তিন সংকেতেই বেশ ঝড়-বৃষ্টি হয়ে থাকে মোংলা বন্দরসহ সংলগ্ন এ উপকূলে। কোনো ভাবেই বুঝা যাচ্ছিল না এ এলাকায় হামুনের প্রভাবে পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত রয়েছে। এমন বিপদ সংকেতের মধ্যেও কোনো প্রভাব পড়েনি জনমনে। লোকজনকে দেখা গেছে যে যার মতো স্বাভাবিক কাজকর্মে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাব মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। ১০৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র, ছয়টি মেডিকেল টিম, এক হাজার ৩৬০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুতসহ প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার মজুদের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
মোংলা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করলেও এর প্রভাবে মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। যদিও ঘূর্ণিঝড়টি মোংলার উপকূলে আসছে না, তার পরও যেকোনো সময় বাতাস-বৃষ্টি বয়ে যেতে পারে এ এলাকার উপর দিয়ে।