সাড়ে ৩ মিনিটে পাড়ি কর্ণফুলী নদীর বঙ্গবন্ধু টানেল
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট। নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় এই টানেলের মাধ্যমে ওয়ান সিটি টু টাউনের ধারণা দেশে প্রথম বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উৎসব মুখর পরিবেশে এ টানেল উদ্বোধন করবেন। দেশের প্রথম ও একমাত্র টানেল উদ্বোধনকে ঘিরে এখন কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য টানেলটি উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে আগামী রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকে। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) টানেলে ঘুরে দেখা গেছে ৩.২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ৬০ কিলোমিটার গতিতে সময় লাগছে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট। পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রবেশ মুখে দেওয়া হয়েছে একই রকম ছাউনি। সেই সঙ্গে আনোয়ারা প্রান্তে ১৬টি টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ইলেক্ট্রিক টোল কালেকশন কেন্দ্র রয়েছে তিনটি।
ইতোমধ্যে টানেলের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক জানান, সব কাজ শেষ হলেও শেষ সময়ের কাউন্ট-ডাউন চলছে।
বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান জানান, টানেলের ভেতর আলো ঝলমলে পরিবেশে সব গাড়ি ছুটে চলবে।পতেঙ্গা প্রান্তে রয়েছে ছয়টি ওজন স্কেল। ওজন মাপা সম্পন্ন হলেই সব গাড়ি ছুটবে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে বানানো টানেলের দিকে। এরপর টানেলের ভেতর প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে ছুটবে গাড়ি। টানেলের পথ শেষ করে আনোয়ারা প্রান্তে বের হওয়ার পথে দেখা মিলবে টোল প্লাজা। ১৬টি টোল প্লাজা রয়েছে। যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক টোল কালেকশন থাকবে তিনটি, বাকি ১৩টিতে থাকবে ম্যানুয়েল টোল কালেকশন। সব প্রস্তুতি শেষে উদ্বোধনের পরের দিন জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে টানেল ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, টানেলের ভেতরে চার লেনের যানবাহন চলাচল করবে। ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুরঙ্গ পথে দুটি টিউব রয়েছে। যার প্রতিটির প্রস্থ ৩৫ এবং উচ্চতা ১৬ ফুট। নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরের সুড়ঙ্গটি চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে। মূল টানেলের সঙ্গে পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এ টানেল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।