বুদ্ধিজীবীরা কেন আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন না? প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
আমাদের দেশে মানবাধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, যারা মাঝেমধ্যে বিবৃতি দেন, তারা কেন আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন না? এমন মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রতিবাদে সতর্ক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, যতদিন চোরাগোপ্তা হামলা চলবে, ততদিন গ্রেপ্তার অভিযান চলবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২৮ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করা হয়েছিল, হাসপাতালে হামলা করা হয়েছিল, অ্যাম্বুলেন্সসহ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, জঘন্য কায়দায় একজন পুলিশকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। একজন সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে যেভাবে সাপ পেটানোর মত পেটানো হয়েছে, এটি কোনো সভ্য কাজ? এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। সেদিন ৩২ জন সাংবাদিককে আহত করা হয়েছিল। এরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও জঘন্য। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে নাই। কিন্তু এরা গাড়ির মধ্যে গাড়ির হেলপার ঘুমিয়ে আছে সেই গাড়িতে আগুন ধরিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতারা যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করে, বিএনপি নেতারাও পালিয়ে গিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করছে। রুহুল কবির রিজভী সাহেব গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন। যেভাবে আল-কায়েদার প্রধান গোপন থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করতো, এখন রিজভী সাহেবও ঠিক আল কায়দার মতো গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অবরোধের নামে গাড়ি পোড়াতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, এই হচ্ছে তাদের কর্মসূচি। অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন, রিজভী সাহেব গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে তারপরও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ দেশে মানুষের মধ্যে শান্তি, স্থিতিশীল পরিবেশ রাখার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থা নিয়েছি। সারা দেশে আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ দেখেছে ২৮ তারিখ আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ উপস্থিত ছিল, আমরা কিন্তু সংঘর্ষে জড়াইনি। আমরা একদম সেদিকে যাইনি। আমরা যদি একটু ইশারা দিতাম, তাহলে আমাদের নেতাকর্মীরা সেদিকে যেতে পারতো। ওরা গর্তের মধ্যে ঢুকে চোর ডাকাত যেভাবে কাজ করে, তার চেয়ে জঘন্য কায়দায়, পেট্রোলবোমা মেরে মানুষের ওপর হামলা করছে। অনেকে দাবি করছে পুলিশ কেন তাদেরকে দেখা মাত্র গুলি করে না?’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখন দাবি উঠেছে প্রত্যেকটি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। যতদিন এই হামলা চলবে, এই ধরনের চোরাগোপ্তা হামলা চলবে যতদিন, ততদিন গ্রেপ্তার অভিযান চলবে। ২৮ তারিখ কিছু করতে না পেরে এখন গার্মেন্টসে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সরকার ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আগে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে হবে। শ্রমিক সংগঠনের যারা পরিচয় দিচ্ছে ওরা কেউ শ্রমিক না।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সহ সভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল প্রমুখ।