বিএনপিতে ফেরা প্রশ্নে শাহজাহান ওমর বললেন, ‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’
বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বলেছেন, “দল পরিবর্তন এটি আমার সাংবিধানিক অধিকার। ঈমান একমাত্র আল্লাহর কাছে, বেঈমানি তো ধর্মের বিষয়। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বেঈমানি নয়। আবারও বিএনপিতে ফিরবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’।
আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাহজাহান ওমর এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, “এটাকে ডিগবাজি বলে নাকি? এটা সাংবিধানিক অধিকার, আদর্শগত ব্যাপার। সবসময় সবখানে এডজাস্টমেন্ট করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মনে হলো জনগণের জন্য কাজ করি, কারণ আমার চাওয়া-পাওয়ার আর কিছু নাই। আমার রাজনীতি করতে রুটি-হালুয়া লাগে না, আমার মন্ত্রী হওয়ার দরকার নাই। আমি সব হয়েছি, এই মাটি আমাকে সব দিয়েছে।”
শাহজাহান ওমর বলেন, “একটা দল করা আমার সাংবিধানিক অধিকার। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে বড় বড় রাজনীতিবিদরাও দল পরিবর্তন করেন। আমি পাকিস্তান আর্মিতে ছিলাম, শপথ পাঠ করেই অফিসার হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় আগস্ট মাস থেকে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। আমি বরিশাল বিভাগের কমান্ডার ছিলাম। দেশের স্বার্থে পাকিস্তান আর্মি ত্যাগ করেছি। কিন্তু আমিতো পাকিস্তান আর্মির শপথ নিয়েছিলাম, পরে তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে বেঈমানি করেছি। কিন্তু জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শেখ মুজিব সরকার আমাকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছে। ঈমান একমাত্র আল্লাহর কাছে, বেঈমানি তো ধর্মের বিষয়। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বেঈমানি নয়।”
আবারও বিএনপিতে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’।
সরকারের সঙ্গে আপস করে জামিন পেয়েছেন কিনা প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, কাশিমপুরে আপস কীভাবে করে। ২৯ নভেম্বর নরমাল প্রসেসে আমার জামিন হয়েছে। ৩০ নভেম্বর তারিখে জয়েন করেছি।
জামিন আমার এমনিতেও হতো। ৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছি, ৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে জামিনের জন্য আমার আইনজীবী দরখাস্ত জমা দিল। কিন্তু জামিনটি হলো না। পরের তারিখে গেলাম, তখন আমার আইনজীবী আদালতকে বললেন, এ মামলায় আরও তিনজনকে (আইনজীবী) জামিন দেওয়া হয়েছে। আমাকে কেন দেওয়া হবে না? এছাড়া, আমি চারবারের এমপি, বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। এজন্য আদালত আমাকে জামিন দিয়েছে।’
নাশকতার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘মামলা হতেই পারে, আমি তো ২৮ অক্টোবর ঘটনার দিন মঞ্চে ছিলাম। এটাতো অস্বীকার করতে পারি না। তাই নাশকতামূলক যে কোনো মামলা হতেই পারে। তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পেলে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেবে, বিচারের কাঠগড়ায় পাঠিয়ে দেবে।’
ঝালকাঠিতে নিজের নির্বাচনি আসনে সমাবেশে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, “এটা মিস আন্ডারস্টান্ডিং ছিল। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে, সেটা সেদিন অনিচ্ছাকৃতভাবে সঙ্গে ছিল। আমার সঙ্গে যারা ছিল তারাও গেল। এছাড়া, এটা ফরমাল মিটিংও ছিল না। সেদিন আমি শুধু সবাইকে বলেছি, দল পরিবর্তন করা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। আমি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি, আমার সঙ্গের সবাই এখন আওয়ামী লীগে। সামনে একসঙ্গে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করব।”