খালেদা জিয়া বাসায় ফিরছেন বৃহস্পতিবার
দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়া হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি)। তাকে হাসপাতাল থেকে বিকেলের দিকে তাকে গুলশানের বাসায় নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
ডা. রফিক বলেন, কাল বৃহস্পতিবার সকালে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। তারা যদি সিদ্ধান্ত দেন তাহলে তাকে বাসায় স্থানান্তর করা হতে পারে। তবে, বাসায় নিলেও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সার্বক্ষণিক তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তিনি আরও জানান, মার্কিন চিকিৎসক দলের অস্ত্রোপচারের পর থেকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামকে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সাময়িকভাবে বাসায় যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বোর্ড এও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, গুলশানের বাসায় ম্যাডামের চিকিৎসা দেবেন মেডিকেল বোর্ড। সেখানে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। ২০২০ সালের মার্চ মাসে সরকারের বিশেষ বিবেচনায় তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিসহ নানা রোগে ভুগছেন। এরপর করোনায় আক্রান্ত হওয়াসহ বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৯ আগস্ট তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু, কয়েকদফা আবেদনের পর সরকারের তরফ থেকে অনুমতি মেলেনি। গত ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হয়। পরদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার যকৃতের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার করেন তারা। এরপর লিভার সিরোসিসজনিত জটিলতা কিছুটা উপশম হলেও তাকে হাসপাতালেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারি বিকেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাকে ফের কেবিনে আনা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে।