প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রপ্তানি আয় বাড়াতে তৈরি পোশাকের মতো পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এবং হস্তশিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যে একই গুরুত্ব দিতে হবে। রপ্তানির জন্য একটি বা দুটি পণ্যের ওপর নির্ভর করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ, অনেক প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আরও নতুন পণ্য উৎপাদন এবং আমরা বর্তমানে রপ্তানির জন্য কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভর করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন এবং নতুন বাজার খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।’ তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন বাজার আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, একটা বা দুইটার ওপর আমাদের নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। কারণ, অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়েই আমাদের আসতে হয়। সেটা মাথায় রাখতে হবে।’
সারা বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এসব অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে এবং কোন অঞ্চলে কোন পণ্য ভালো হয়, সেখানে সেই শিল্প গড়ে উঠবে। সেবা খাতেও আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে ও ভালো সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এইখাতে রপ্তানি আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে আট বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছে এবং আইসিটি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিশাল সুযোগ সামনে রয়ে গেছে। আইটি খাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ২৭ দশমিক পাঁচ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ, দেশে পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও রপ্তানি করতে পারছি। যদিও বিশ্বমন্দার অভিঘাতে ইউরোপ-আমেরিকার অনেক উন্নত দেশেও পণ্য চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। সেটা মাথায় রেখে নতুন বাজার আমাদের খুঁজতে হবে, নতুন জায়গায় যেতে হবে।’
শেখ হাসিনা সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পণ্য রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে সরকার জাতীয় ‘ট্যারিফ পলিসি-২০২৩’ প্রণয়ন করছে। এটা আমাদের রপ্তানিতে আরো সুযোগ সুবিধা এনে দেবে।
সরকারপ্রধান বলেন, এখানে আমাদের দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বিদেশি অতিথিরা আছেন। আমি একটা অনুরোধ করব, আমাদের আমদানি রপ্তানিতে ভারসাম্য বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার। আপনারা রপ্তানি করেন, রপ্তানি করার সময় যে অর্থ ব্যবহার হয়, তার যে রিটার্নটা আসবে, ঠিক চাহিদা মতো তা আসে না। সেদিকে, সবাইকে একটু যত্নবান হওয়ার আমি আহ্বান জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিবছর একটা পণ্যকে বর্ষপণ্য হিসেবে সুনির্দিষ্ট করে ইদই। পাট ও পাট জাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, এভাবে প্রতিবছরই বর্ষপণ্য ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবার আমি ঠিক করেছি ‘হস্তশিল্প পণ্যকে’ ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণার।
কেন হস্ত শিল্পকে বর্ষপণ্য করা হলো তার ব্যাখ্যায় শেখ হাসিনা বলেন, এবারের যে বর্ষপণ্য অর্থাৎ ‘হস্তশিল্প পণ্য’ সেটা আমাদের নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াবে এবং এর মাধ্যমে নারীরা স্বাবলম্বীতা অর্জন করতে পারবে।