সাবেক কাউন্সিলর বাচ্চুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা চলতে বাধা নেই
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল বাসেত খান বাচ্চুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা স্থগিতের আদেশ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ বাসেত খান বাচ্চুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই।
আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলা স্থগিতাদেশ বাতিলের রায় প্রকাশ করেছেন।
এ মামলায় আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ওমর ফারুক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা স্ব স্ব পক্ষের আইনজীবীকে শুনেছি। রেকর্ডে থাকা অন্যান্য উপকরণ এটি প্রকাশ করে, ঘটনার পর ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরীক্ষা করার পরে ডাক্তার ধর্ষণের ইতিবাচক লক্ষণ খুঁজে পান। বাংলাদেশ পুলিশের ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরির তৈরি ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টে শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায় অভিযুক্ত-আপিলকারীর। রিপোর্টের আলোকে পুলিশ অভিযুক্ত-আবেদনকারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় চার্জশিট দাখিল করে। আমরা মনে করি, এই ফৌজদারি আপিলের উদ্দেশ্য নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে আপিলটি নিষ্পত্তি করা উচিত। সেই অনুযায়ী আপিল নিষ্পত্তি করা হলো। এই আদালত কর্তৃক প্রদত্ত স্থগিতের আদেশ বাতিল করা হলো।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল বাসেত খান বাচ্চু ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর রাত ৮টায় ভুক্তভোগীকে সালিশের জন্য তার অফিসে ডেকে পাঠান। ভিকটিম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেখানে যায় এবং তারপর ভিকটিমকে কাউন্সিলর আব্দুল বাসেত খান বাচ্চু তার দক্ষিণ-পশ্চিম কক্ষে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরীক্ষার পরে ডাক্তার জোরপূর্বক যৌন মিলনের আলামত খুঁজে পান। এ ঘটনায় মুগদা থানায় ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর ধর্ষণ মামলা করেন ভিকটিম।’
মামলাটি তদন্তকালে বাংলাদেশ পুলিশের ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি আবদুল বাসেত খান বাচ্চুর শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযুক্ত আবেদনকারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ চলমান ছিল।
২০১৯ সালে আসামি আব্দুল বাসেত খান বাচ্চুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন পাশাপাশি রুল জারি করেন। গত ১৮ জানুয়ারি বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামির আপিল আবেদনটি নিষ্পত্তি করে রায় দেন। পাশাপাশি ধর্ষণ মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন।