শিক্ষা সফরে মদ পানের ভিডিও, তদন্ত কমিটি গঠন
মাদারীপুরের শিবচরে স্কুল থেকে শিক্ষা সফরে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একত্রে মদ পান করছে। শিক্ষার্থী বিদেশি মদের বোতল থেকে শিক্ষককে মদ ঢেলে দিচ্ছে, আবার শিক্ষকের সামনেই শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাস করে মদ পান করছে। এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি গত শনিবার ঘটলেও গতকাল সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সবকিছু জানাজানি হলে জেলাজুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ভাইরাল হতে মদের বোতলে জুস ভরে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
জানা যায়, শনিবার জেলার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শনিবার ভোরে ১৬ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৪১ শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ যায়। কিন্তু সঙ্গে নেওয়া হয়নি কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
ভিডিও ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা সফর শেষে এলাকায় ফেরার পর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মদ পানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মোরশেদ মদের বোতল হাতে নিয়ে মদ ঢালছেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে মদের বোতল দিচ্ছেন।
এমন ভিডিও দেখে অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মোরশেদ ও আল নোমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মো. মাকসুদুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। তদন্ত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মো. আসাদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা জানাজানির পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকমহল।
অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালিদ মোরশেদ মুঠোফোনে বলেন, ‘ভাইরাল হতে শিক্ষার্থীরা মদের বোতলে জুস খাচ্ছিল। আমি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ওদের নিষেধ করেছি। ওসবই মজার ছলে হয়েছে। বাট সিরিয়াস কিছু না। তাও আমাকের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন শিকদারও একই দাবি করে বলেন, শিক্ষকদের কোনো দোষ নেই। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো অসামাজিক কাজ করেনি। তাও সঠিক তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে স্থানীয় সমাজ ব্যবস্থায়। তাই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি অভিভাবক মহলের।