‘মেয়েটা মৃত্যুর সময় বারবার বাবা বলে চিৎকার করেছিল’
খালাতো বোন আলিশা ও রিয়াসহ পাশের বাসার আরও তিনজন বান্ধবীর সঙ্গে বেইলি রোডের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন নিমু। ভবনে আগুন লাগলে তারা ছয়জনই ভেতরে আটকা পড়েন। আগুন যখন নিচ থেকে ওপরের দিকে ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল, তখন নিমু ফোন করেন তার বাবাকে। বাঁচার আকুতি জানিয়ে নিমু বলেন, ‘বাবা, আমাকে বাঁচাও, আমি আটকা পড়েছি।’ এর কিছুক্ষণ পরই বন্ধ হয়ে যায় নিমুর মোবাইল ফোন।
বাবা আবদুল কুদ্দুস দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারেন, তার মেয়ের মরদেহ ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। আজ শুক্রবার (১ মার্চ) আবদুল কুদ্দুস ভারাক্রান্ত কন্ঠে মেয়ের জন্য আহাজারি করে বলেন, ‘মেয়েটা মৃত্যুর সময় বারবার বাবা বলে চিৎকার করেছিল।’
আলিশার মামা জানান, নিমু তার খালাতো বোন আলিশা ও রিয়াসহ পাশের বাসার আরও তিনজন বান্ধবীর সঙ্গে ভবনটির একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। তারা ছয়জনই আগুনে মারা গেছেন।
রাজধানীর বেইলি রোডের ব্যস্ততম এলাকার ওই ভবনে ছিল না কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। জরুরি অবস্থায় বের হওয়ারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আগুনে পুড়ে যত না মানুষ মারা গেছে, তার চেয়েও বেশি মারা গেছে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে। তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রেস্টুরেন্টটিতে আগুন লাগে। পরে তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে ২২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মারা গেছে মোট ৪৫ জন। আগুনের এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।