মানুষ এবারের ঈদে চরম দুর্দশায় দিন কাটিয়েছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা জনগণকে প্রতারিত করে ভাঁওতাবাজির মাধ্যমে মানসিক আশ্রয় খুঁজছেন। এরা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি লুটপাটসহ মানুষের সহায়-সম্পদ আত্মসাৎ করে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সরাসরি জনগণকে প্রতারিত করেছে। দীর্ঘ দেড় দশক জনগণের পকেট কাটার কারণে এখন দেশে হাহাকার পড়েছে। অনাহার—অর্ধাহারে ক্ষুধার্ত মানুষ এবারের ঈদে চরম দুর্দশায় দিন কাটিয়েছে। নিখুঁত ধুর্ততায় জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে বিরতিহীন ডাহা মিথ্যার আবর্তে জনগণকে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আজ সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় দশক জনগণের পকেট কাটার কারণে এখন দেশে হাহাকার পড়েছে। অনাহার—অর্ধাহারে ক্ষুধার্ত মানুষ এবারের ঈদে চরম দুর্দশায় দিন কাটিয়েছে। বাজারে আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতির কারণে ভাত—তরকারি যোগাড় করা যেখানে কষ্টকর সেখানে ঈদের পোশাক কিনবে কিভাবে?’ তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত একজন গার্মেন্ট শ্রমিক নিজের শিশু সন্তানের জন্য ফুটপাথ থেকে ফ্রক কিনতে পারেনি। চট্টগ্রামের ঈদ বাজারে গত বছরের তুলনায় এবার ৩০ শতাংশ কেনাকাটা কমেছে। এই পরিস্থিতি সারা দেশে। ঢাকাতে ধনীদের কেনাকাটা বাড়লেও নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। কাপড় ব্যবসায়ীরা শাড়ী, লুঙ্গি, পাঞ্জাবী তাদের টার্গেটের অর্ধেকও বিক্রি করতে পারেনি। অনেক ব্যবসায়ী ঈদের প্রাক্কালে বাকীতে কাপড় নিয়ে বিক্রি করার পর তার টাকা পরিশোধ করে। এখন তাদের কপালে হাত।’
রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী নেতাদের অনেকেই বলেছেন, দেশে বিত্তশালীদের সংখ্যা বেড়েছে, যারা মূলতঃ বেনজীর শ্রেণির। এখন প্রশ্ন হচ্ছে—এই বিত্তশালী কারা? এই বিত্তশালী শ্রেণি হচ্ছে বেনজীর শ্রেণি—যারা বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম, খুন করে প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে। এছাড়া মেগা প্রজেক্ট ও অবাধে ব্যাংক লুটের কথা এখন কল্পকাহিনীতে পরিণত হয়েছে যা অতিবাস্তব। এটা বাস্তব সত্য যে, দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতার ওপরের দিকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। অত্যাচারী শাসকের পদতলে পিষ্ট আজ বাংলাদেশ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সরফুদ্দিন আহমেদ সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, তারিকুল আলম তেনজিং, রফিকুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম প্রমুখ।