সরকারের লুটতরাজে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আওয়ামী সরকার দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজ করে ভঙ্গুর করে ফেলেছে। তারা দেশে ডামি উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে, যেখানে আওয়ামী লীগের নেতারাও অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাত দিন ধারাবাহিক কর্মসূচির প্রথম দিনে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মাঝে বোতলজাত পানি, স্যালাইন বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখন আবার ডামি উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আজকে সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতারাও সুযোগ পাচ্ছে না। মন্ত্রী-এমপিদের ভাই, সালা, ভাগিনা, ভায়রাদের কারণে জিম্মি স্থানীয় জনগণ। প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় এমপিরাজ তৈরি হয়েছে, তা-ও ডামি এমপি। আজকে ডামি এমপির স্ত্রী, শ্যালক, ভাই দিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে এমপিরাজ। এমপি রাজত্বের কারণে জিম্মি গোটা এলাকা।’
রিজভী বলেন, ‘আমাদের বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বারবার বলেছেন, কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন না। কিন্তু, গণবিরোধী প্রধানমন্ত্রী গণবিরোধী প্রজেক্ট করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা গলাচিপা, বাউফলে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে জিয়াউর রহমান রেশনিং ব্যবস্থা তুলে নিয়েছিলেন। আজকে তারা দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজ করে ভঙ্গুর করে ফেলেছে। মুখে স্বয়ংসম্পূর্ণের কথা বলে, আবার রেশনিং ব্যবস্থাও চালু করেছে। তা-ও সাধারণ মানুষ এর আওতায় নয়। আওয়ামী গোষ্ঠী এই রেশনিং কার্ডও দলীয়করণ করেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আদা, রসুন, পেঁয়াজ ডলারের দামে আমদানি করতে হচ্ছে। মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে পারছে না। আজকে মানুষকে সন্তান বিক্রি করে পেট চালাতে হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘ফরিদপুরে ছাত্রলীগ সভাপতির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা, সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ভাই নাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করেছে। এই আলাদীনের চেরাগ কোথা থেকে এল। কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়ায় এত বাড়িঘরের মালিক কীভাবে হলেন? একসময় আজিমপুর কবরস্থানে যেতে হবে, সেটা তারা ভুলে গেছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, ‘সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির কর্মসূচির দিন কেন আপনারা পাল্টা কর্মসূচি দেন? তিনি বললেন, বিএনপিকে মানসিকভাবে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা পাল্টা কর্মসূচি দেই। এতেই প্রমাণ হয় ওবায়দুল কাদেরের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি সন্ত্রাসী ভাষায় কথা বলেন। তিনি (ওবায়দুল কাদের) চাঁদাবাজ ও গুণ্ডাদের গডফাদার।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক মো. মোহন, হাজী মনির হোসেন, সদস্য দপ্তরের দায়িত্বে সাইদুর রহমান মিন্টু, প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তাসহ আরও অনেকে।