ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব ঢাকার বাতাস মাঝারি অবস্থানে
মেগাসিটি ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে শহরটির বায়ুমানে কিছুটা উন্নতি হলেও অধিকাংশ সময়েই ঢাকার বায়ুতে থাকে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে আজ সোমবার ভোর থেকেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানীতে দমকা বাতাসসহ বৃষ্টি ঝরছে। ফলে শহরটির বাতাসের মান মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আজ সোমবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ডে ৭১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা রয়েছে ২৭ নম্বরে। যা দূষণের মাঝারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ২৮০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারতের শহর দিল্লি, ১৭৮ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাস, ১৬৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মিশরের কায়রো শহর, ১৫৮ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার স্কোর ১৫৫।
একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তাকে ‘মধ্যম’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১ বা তার বেশি একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো—বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো—ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।