সুনামগঞ্জে বন্যায় ম্লান ঈদের আনন্দ
সুনামগঞ্জে ঈদুল আজহার খুশি ম্লান করে দিয়েছে বন্যা। গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে লোকালয়ে ঢুকে গেছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমা নদীর তীর উপচে পৌরশহরে পানি ঢুকে বন্যা দেখা দিয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া, তেঘরিয়া, দক্ষিণ আরপিনগর, কাজির পয়েন্ট, বাঁধনপাড়ায় মানুষের বসতঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে গেছে। শহরের কাজির পয়েন্ট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আজ ঈদের দিন। বেশির ভাগ বাসার ভিটিতে পানি থাকায় কোরবানির গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষ। এলাকাবাসী বলছেন, গত কয়েকদিন ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ঘরের আঙিনায় পানি থাকায় কোরবানি দেওয়ার জায়গাটুকুও নেই।
কাজির পয়েন্টের ব্যবসায়ী মো. রাজু আহমদ বলেন, ‘রাতে এত বৃষ্টি হয়েছে সকাল থেকে নদীর পানি বেড়ে কাজির পয়েন্টের সড়ক ডুবিয়ে দিয়েছে। দোকানের সব মালামাল ভিজে যাচ্ছে। ভোর থেকে মালামাল সরানোর কাজ করছি।’
ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন জানান, বাসার নিচে হাটু সমান পানি। কোরবানি করার মত জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পানি না নামলে গরু জবাই করা সম্ভব না।
একইভাবে সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় বন্যা দেখা দিচ্ছে। এই ছয় উপজেলায় অন্তত দুই শতাধিক গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, স্বল্প মেয়াদি বন্যা চলছে। তবে এই বন্যা বেশি দিন স্থায়ী হবে না।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘বন্যা মোকাবিলা করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে।’