বাবার দেড় কোটি টাকা চুরির মামলা করে গ্রেপ্তার মেয়ে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসার সিন্দুক থেকে আবদুল হামিদ নামের এক ব্যবসায়ীর এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছিলেন এক ব্যবসায়ী। মামলার পর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে থানা পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ হয়, এ টাকা চুরি করেছেন ব্যবসায়ীর একমাত্র মেয়ে মিনা হামিদ। মামলার চার দিনের মাথায় থানা-পুলিশ মিনাকে গ্রেপ্তার করে।
আজ রোববার (১৩ জুলাই) মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভূঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের সন্দেহ হয়, সিন্দুকের তালা না ভেঙে টাকাগুলো তার মেয়ে চুরি করেছেন। পরে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মিনা হামিদ স্বীকার করেছেন, টাকা চুরি করে তিনি গোপনে বিয়ে করা স্বামী সাকিবুল হাসানের হাতে তুলে দিয়েছেন।
ওসি জানান, পরে অভিযান চালিয়ে সাকিবুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে চুরির টাকা থেকে ৯০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় ঠিকাদার ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ স্ত্রী–সন্তান নিয়ে বসবাস করেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। ঈদুল আজহার দুই দিন আগে সপরিবার তিনি ভোলায় গ্রামের বাড়িতে যান। ঈদ উদযাপন শেষে গত ২০ জুন ঢাকার বাসায় ফেরেন তিনি। ঢাকায় ফেরার ১১ দিনের মাথায় তিনি বাসায় টাকা রাখার সিন্দুক খুলে দেখতে পান, তার এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা নেই।
পুলিশ আরও জানায়, এ চুরির ঘটনায় আবদুল হামিদ বাসায় সবাইকে টাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু, টাকা নেওয়ার কথা কেউই স্বীকার করেননি। পরে হামিদ ৪ জুলাই মেয়ে মিনাকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে চুরির মামলা করেন।
মো. মাহফুজুল হক ভূঞা জানিয়েছেন, আবদুল হামিদের মেয়ে ও মেয়ের জামাই ৮ জুলাই গ্রেপ্তার জন। তারা দুজনই এখন কারাগারে রয়েছেন। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
মো. মাহফুজুল হক ভূঞা বলেন, মামলার পর পুলিশ ব্যবসায়ী আবদুল হামিদের বাসায় যান। সিন্দুক না ভেঙে টাকা চুরির সঙ্গে ঘরের লোকজন জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। বাসায় বসবাসকারী প্রত্যেককে কৌশলে টাকা চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বাসার সব সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ব্যবসায়ী আবদুল হামিদের একমাত্র মেয়ে মিনা হামিদকে তাদের সন্দেহ হয়। টানা চার দিন বাসায় গিয়ে পুলিশ নানা কৌশলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে মিনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, তিনি সিন্দুকের তালা খুলে টাকা চুরি করেছেন। সেই টাকা তিনি স্বামী সাকিবুল হাসানের কাছে দিয়েছেন। তাঁর তথ্যমতে সাকিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, মিনা হামিদ বার-অ্যাট ল’ পড়ছেন। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত বছর রাজধানীর তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস সাকিবুলকে বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে পরিবার মানবে না। এ কারণে মিনা হামিদ বাবার সিন্দুক থেকে টাকা নিয়েছেন। উদ্দেশ ছিল, বাসা থেকে কাউকে না বলে সাকিবুলের সঙ্গে সংসার শুরু করবেন।