স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা ৩২ আইন : কামাল আহমেদ
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টি করছে ৩২টি আইন। প্রেস কাউন্সিল একটি ব্যর্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। এটাকে ঠিক করার জন্য আমরা কাজ করছি। একটি সার্ভে করছি যে, জনগণ কি আমাদের ওপর আস্থা রাখে কি না। না রাখলে কি করা যেতে পারে আস্থা ফেরানোর জন্য।
গতকাল রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ : গণমাধ্যম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল আহমেদ বলেন, গত ৫৩ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম সরকারি গণমাধ্যম জরিপ বাংলাদেশজুড়ে। মিডিয়া মালিকানা নিয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। গণমাধ্যমের মানুষ যেন তাদের সমস্যার কথা বলতে পারেন ও সমাধান দিতে পারেন, এটি নিয়ে কাজ করছি। কমিশন সাংবাদিকদের বেতন নিয়ে কাজ করতে পারবে না। তবে, কমিশন সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করতে পারে। মিডিয়া নিজেদের সম্পাদকের মূল্যায়ন করে না। এটি করা দরকার নিজের ভুল ধরার জন্য। সেলফ সেন্সরশিপ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। এটা নিজেকেই তাড়াতে হবে। গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ও ইউনিয়ন বিভাজন অনেক। এটা নিরসন করতে পারলে অনেক সমস্যাই সমাধান হবে। সংস্কারের মাধ্যমে পরিবর্তন হয় না এমন নয়। এটা নির্ভর করে সরকারের ওপর কতটা চাপ দেওয়া যায় সংস্কার করার জন্য। গত ১৫ বছরের কনটেন্ট আলোচনা করে দেখতে হবে। বাইরের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। এজন্য গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে যেন তারা বাহ্যিক হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য মিনিমাম বেতন থাকতে হবে। সাংবাদিকরা সাংবাদিকতা করবেন, বিজ্ঞাপন না। গত সরকার অনুমতি দিয়েছে, যার ইচ্ছে সেই সাংবাদিকতা করতে পারবেন। এমন কিছু সংবাদ আছে যাদের মিশন কোনো আওয়ামী লীগের আদর্শ প্রচার করা। এই সংবাদমাধ্যম এখনও চালু আছে। টেলিভিশন ও পত্রিকার মালিকানা একই ব্যক্তি বাংলাদেশে বহুল দেখা যায়। এতে একচেটিয়া ব্যবসা তৈরি হয়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা থাকতে হবে যে তাদের স্বার্থ কী। এটার নিশ্চয়তা সম্পাদকরা করবেন। বাংলাদেশের সব পত্রিকা ও টেলিভিশন সম্পাদক মিলে আলোচনা করে একটি ভালো সম্পাদকীয় নীতি তৈরি করবেন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ার মুনিরা খান, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও ডিজিটালি রাইট বিডির প্রতিষ্ঠাতা মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।