যৌতুকের দাবিতে বর্বরতা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
আড়াই মাসের গর্ভবতী ছিলেন তাহমিনা জান্নাত (২২)। তাতেও ক্ষমা মেলেনি। যৌতুকের খড়গ নেমে আসে তার ওপর। তাকে হত্যা করেন স্বামী উজ্জ্বল মাহমুদ (২৮)। এমন অভিযোগে মামলার রায়ে আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এই রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক জানান, জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের দেউলিয়াবাড়ি গ্রামের উজ্জল মাহমুদের সঙ্গে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মাদারগঞ্জ উপজেলার জোরখালী ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের মেয়ে তাহমিনা জান্নাতের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্ত্রী তাহমিনা জান্নাত গর্ভবতী হলে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতেন। ১৮ এপ্রিল রাতে উজ্জ্বল মাহমুদ তার নিজ বাড়িতে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গর্ভবতী স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ তাহমিনা জান্নাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, ঘটনার পর দিন ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল নিহতের বাবা ইব্রাহীম খলিল (৪২) বাদী হয়ে উজ্জল মাহমুদকে প্রধান আসামি ও তার বাবা-মাসহ ১৩ জনকে আসামি করে জামালপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আটজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। পাঁচজন স্বাক্ষীর ভিত্তিতে বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ মামলার প্রধান আসামি উজ্জল মাহমুদের উপস্থিতিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সবাইকে খালাস দেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ফজলুল হক ও আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান পলাশ। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছে।