বাংলাদেশে তুরস্কের শিল্প-কারখানা স্থাপনে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
বাংলাদেশে তুরস্কের প্রযুক্তি নিয়ে আসতে, আরও বিনিয়োগ করতে, শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং এদেশের যুব শক্তিকে ব্যবহার করতে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুর্কিয়ের (তুরস্কের সরকারি নাম) বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এই আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিনিধি দলকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের যুব সমাজের জন্য কাজের সুয়োগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে তুরস্কের সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের যুব সম্প্রদায়কে সুযোগ দিতে হবে, তাই আমরা আপনাদের সহায়তা চাই, আপনাদের দেশের প্রতি আমার এই আবেদন থাকবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যুব সম্প্রদায়কে আপনাদের শিল্প-কারখানা চালাতে ব্যবহার করুন যাতে করে আপনারা এই অঞ্চলে আপনাদের পণ্য সরবরাহ করতে পারেন।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও তুরস্ক নিজেদের মধ্যে স্বপ্নের সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্ক বেশ উষ্ণ এবং আমরা তা সব খাতেই তৈরি করতে চাই। আমাদের অনেক কিছু করার আছে আর এজন্য আপনাদের সমর্থন, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিনিয়োগ আমাদের প্রয়োজন। আপনারা প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আপনারা আপনাদের প্রতিরক্ষা শিল্পকে এখানে গড়ে তুলতে পারেন। শুরুটা হোক, আপনাদের সব প্রয়োজনে আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশ থেকে পোশাকখাত খাতেই বেশি পণ্য আমাদনি করে, তবে এর বাইরেও সহযোগিতাকে সম্প্রসারণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্পের ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যসেবা খাতে, ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা হতে পারে।
ড. ওমর বোলাত বলেন, ‘আমরা ভারত ও অন্যান্য বাজারের চাইতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে পারি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা হতে পারে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে সম্প্রসারণ করতে পারে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ তুরস্কে ৫৮১ মিলিয়ন ডলারের পন্য রপ্তানি করে। আর এ সময়ে আমদানি করে ৪২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। বাংলাদেশের গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, এক্সেসরিজ, রসায়ন, প্রকৌশল, নির্মাণ ও জ্বালানি খাতে ২০টিরও বেশি তুরস্কের বৃহৎ কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে।
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত আগস্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে তার টেলিফোন সংলাপের কথা উল্লেখ করেন। এরপর গত অক্টোবরে তুরস্কের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বাশির উদ্দিন, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, বিশেষ দূত লুৎফে আলম, এসডিজি বিষয়ক সচিব লামিয়া মোরশেদ, বিডা চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।