‘ফারসি ভাষা বাংলাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে’
পৃথিবীতে যত ভাষা রয়েছে তার মধ্যে ফারসি ভাষা বিশ্বের অন্যতম মিষ্টি ভাষা হিসেবে পরিচিত। ইসলামি বিশ্বে আরবির পরেই এই ভাষার স্থান। ফারসি ভাষার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। এটি হলো প্রেম, ভালোবাসা, মহব্বত ও এরফানের ভাষা। আমরা প্রতিনিয়ত কথাবার্তায় যেসব শব্দ ব্যবহার করি তার মধ্যে অনেক ফারসি শব্দ রয়েছে। এই ভাষা বাংলাকে আরও সমৃদ্ধ ও মিষ্টিভাষায় পরিণত করেছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) আঞ্জুমানে ফারসি বাংলাদেশ-এর ৬ষ্ঠ দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের উদযাপন এক অর্থে একটি সভ্যতার উদযাপন। এ ভাষা দুটি বড় কাজ করেছে। একটি হলো মিডিল ইস্ট থেকে এশিয়া মাইনরের একটি বড় অংশকে এবং পরবর্তীতে উত্তর আমেরিকার কিছু অংশকে একসাথে করতে পেরেছে। দ্বিতীয়ত আমাদের ভূখণ্ডে অর্থাৎ ভারতীয় উপমহাদেশে রাষ্ট্রচর্চা এবং ভাষা চর্চার পাশাপাশি চলেছে অনেক দিন। ১২০৪ থেকে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয়শ বছর ভারত উপমহাদেশের রাজভাষা ছিল ফারসি। এই ভাষা আমাদের বৃহত্তর সমাজ ও রাজনীতির অনেক গভীরে প্রোথিত। এজন্য এই ভাষার চর্চা আমাদের দেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদেশে যারা ফারসি ভাষা জানেন এবং ফারসি ভাষায় অভিজ্ঞ তাদেরকে এক জায়গায় করার উদ্যোগ নিয়েছে আনজুমানের ফারসি বাংলাদেশ। এটা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং ঢাকাস্থ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মাদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমানে ফারসি বাংলাদেশ-এর সভাপতি ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী।
অনুষ্ঠানে নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, সহসভাপতি নির্বাচিত হন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজালাল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নূরে আলম। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক ড. মো. মুমিত আল রাশিদ। সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদি হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসানুল হাদি, কোষাধ্যক্ষ আহসানিয়া মিশন ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক শেইখ মোহাম্মদ ওসমান গণি, অনুবাদ ও গবেষণা সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রভাষক তানজিনা বিনতে নূর, প্রকাশনা সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের ফারসি বিভাগের শিক্ষক অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম।