তিন্নি হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য অভি খালাস
রাজধানীতে খুন হওয়া বিজ্ঞাপনের মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোছা. শাহীনুর আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মডেল তিন্নির মরদেহ পাওয়া যায়। পরেরদিন অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কাইয়ুম আলী সরদার। এরপর নিহত তিন্নির মরদেহের ছবি পত্রিকায় ছাপা হলে সুজন নামে নিহতের এক আত্মীয় মরদেহটি মডেলকন্যা তিন্নির বলে শনাক্ত করেন। পরে মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) ন্যস্ত হয়। আর তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন সিআইডির পরিদর্শক ফজলুর রহমান।
এরপর মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তিন্নি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এ ছাড়া এই মামলায় ২২টি আলামত জব্দ করা হয়।
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ‘গোলাম ফারুক অভির সঙ্গে ভুক্তভোগী তিন্নির দৈহিক সম্পর্ক ছিল। অভি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন্নির সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে জড়ান।’
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ‘তদন্তের সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী সাক্ষী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন সানজিদুল ইসলাম ইমন বলেন, ইমন যখন ভারতে পালিয়ে ছিলেন, তখন গোলাম ফারুক অভির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সে সময় অভি কথা প্রসঙ্গে বলেন, মডেল তারকা তিন্নির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। অভি তিন্নিকে দিয়ে তাঁর স্বামী পিয়ালকে ডিভোর্স দেওয়ান। পরে তিন্নিকে বিয়ের আশ্বাস দেন। এই আশ্বাসে তিন্নির সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করেন এবং তিন্নির বাসায় রাতযাপন করেন। এভাবে তাঁদের অবৈধ সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু, বিয়ে না করায় তিন্নি অভির গোপন তথ্য মিডিয়াতে ফাঁসের হুমকি দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে অভি তিন্নির মাথা ধরে ধাক্কা দেন। তিন্নি মাথায় আঘাত পান এবং পরক্ষণেই মারা যান।’
ইমনের বরাতে অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ‘অভি তাঁর গাড়িতে করে তিন্নির মরদেহ বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচে ফেলে রাখেন। পরে অভি ভারতে পালিয়ে যান।’
ওই অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা এক সময় গ্রেপ্তার তিন্নির স্বামী শাফাকাত হোসেন পিয়াল, এবায়দুল্লাহ ওরফে স্বপন গাজী ও গাজী শরিফ উল্লাহ ওরফে তপন গাজীকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন।