পুঁজিবাজারের উন্নতির স্বার্থে সরকার প্রয়োজনীয় সব করবে : অর্থমন্ত্রী
দেশের অর্থনীতি গতিশীল করার জন্য একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার অত্যাবশ্যক। পুঁজিবাজারকে আরও জনবান্ধব এবং এর উন্নতির স্বার্থে সরকার প্রয়োজনীয় সব করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আলোকে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা’ বিষয়ক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য যা চাওয়া হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। আমরা অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছি, নগদ লভ্যাংশে উৎসাহিত করেছি। এ সময় আসন্ন বাজেটকে কেন্দ্র করে সবার উপকারে আসবে এমন কোনো পরামর্শ থাকলে, তা দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
বর্তমানে পুঁজিবাজার অনেক শক্তিশালী উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বাজারকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করতে চাই। তিনি পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, একটি কোম্পানি এক বছর বা দুই বছর বোনাস শেয়ার দিতে পারে, যা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য হতে পারে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে না। কিন্তু অনেক কোম্পানির রিজার্ভ বড় করে দেখায় এবং অর্থের ছয়-নয় করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) নির্ভর করতে হবে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি এটি বুঝিয়ে দিয়েছে, আইটি ছাড়া অনেক কিছুই সম্ভব না। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অনেক সময় এক শ্রেণির লোক প্রতারণা করে। এই প্রতারণা বন্ধের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি অনেক কাজ করতে পারে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তাই এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে কাজ করছে বিএসইসি। নতুন পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছি। বিশেষ করে একটি গতিশীল বন্ড মার্কেট তৈরির কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সুকক বন্ড চালু হয়েছে। পরপেসুয়াল বন্ড ও গ্রিন বন্ড নিয়ে কাজ চলছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে শুধু ইক্যুইটি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা অনেক বন্ডের অনুমোদন দিয়েছি। যে বন্ড ইতোমধ্যে ফল দিতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, আগামীতে বন্ডগুলো লেনদেনে আসতে যাচ্ছে। বিদেশিরা বন্ডে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দুর্বল কোম্পানিগুকে সবল করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ওটিসি মার্কেটের চারটি কোম্পানি মূল মার্কেটে নিয়ে আসা হয়েছে। ২১টি কোম্পানি এটিবিতে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে এবং আরও ১৮টি কোম্পানি ভালো করার জন্য কাজ চলছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।