লাখ টাকার গরুর চামড়া ২০০, বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
পাবনায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ঈদের দিন দুপুর থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা একটি বড় গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে কিনতে থাকে। কিন্তু বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজার আরও পড়ে যায়। গ্রাম থেকে চামড়া আমদানি হওয়ায় সন্ধ্যায় ব্যাপক দরপতন ঘটে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যায় ছাগলের চামড়ার দাম মাত্র ১০ টাকা ও গরুর চামড়ার দাম দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকায় এসে ঠেকে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে দামে চামড়া কিনে পাইকাররা আরও কম দাম বলায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পড়েছে ব্যাপক লোকসানের মুখে।
গত বুধবার ঈদের দিন পাবনার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদা না থাকায় এবং চামড়া কাটা থাকার অজুহাতে দাম দিচ্ছে না পাইকাররা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চলছে বাকবিতণ্ডা। বিক্রেতাদের অভিযোগ, এক লাখ টাকা মূল্যের গরুর চামড়ার দাম ২০০ টাকাও বলছে না। আড়াই লাখ টাকার গরুর চামড়া কেনা হয়েছে ৩০০ টাকায়।
চামড়ার বড় আড়তদাররা কোভিড ১৯-এর প্রভাব ও ট্যানারি মালিকদের কাছে গত বছরের পাওনা থাকায় অনেকে তেমন একটা চামড়া কিনছেন না বলে জানান।
পাবনার টেবুনিয়া বাজারের শাহেদ আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁর নিজের কোরবানি দেওয়া গরুর চামড়া অন্তত দেড় হাজার টাকায় বিক্রির আশা করেছিলেন। কিন্তু সেই চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
ছাবেদ আলী নামের একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী বলেন, পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে চামড়া কিনেছি। কিন্তু পাইকাররা এসে সেই চামড়ার দাম কেনার চেয়ে অর্ধেকও বলছে না।
পাবনার চামড়া ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, চামড়া কেনার পর লেবার, লবণ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ব্যয় করতে হয়। কিন্তু বাঁধাধরা দাম থাকায় অথবা দাম বেঁধে না দেওয়ায় চামড়া কিনে বিপদে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
অপর এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, কসাইদের চামড়া ভালো থাকে, তাই সেগুলোর দামও বেশি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ছাড়ানো চামড়ায় অসংখ্য কাটা থাকে। ফলে ওই চামড়া কোনো কাজে আসে না, আর আমরা তা কিনতেও চাই না। কিন্তু নতুন ব্যবসায়ীরা না জেনেই আন্দাজে যেকোনো চামড়া কেনায় এ সমস্যা তৈরি হয়।
চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো যে আয় করে থাকে, তাদেরও আয় কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।