সর্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্ত
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বৃদ্ধকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সরকার প্রণীত জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছিল। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় আমি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি যে, সরকার আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এর আগে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্যও একই সুযোগ রাখা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আজ বলেন, ‘আপনারা জানেন—বাংলাদেশের অনেক অর্জন, সে অর্জনের সঙ্গে আজ যুক্ত হলো আরও একটি অর্জন। সেটি হলো সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা। এ পেনশন ব্যবস্থা সবার জন্য। পেনশন ব্যবস্থাটি আমাদের সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে বাধ্যর্কজনিত কারণে যাঁরা অভাবগ্রস্ত হবেন, তাঁদের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হবে। এ সাহায্য লাভের অধিকার রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বাধ্যর্কজনিত কারণে যেসব অভাব আসতে পারে, তা নিরসনে অভাবগ্রস্ত নাগরিকেরা পেনশন পাবেন।’
করোনাভাইরাসের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এবারের বাজেটের আকার যেমন বড়, তেমনি এ বাজেটে ঘাটতিও ধরা হয়েছে বড়।
অনুদান বাদে এবারের বাজেটের ঘাটতি দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশের সমান। আর, অনুদানসহ বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের সমান।
এটি বর্তমান সরকারের ২৩তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। বাজেটে সঙ্গত কারণেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসহ বেশকিছু খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।