বাজেট
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীরা পিছিয়ে : অর্থমন্ত্রী
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিগত দশকজুড়ে নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে। বর্তমানে কর্মক্ষম নারীর মাত্র ৩৩ শতাংশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। সম্প্রতি মোট শ্রমশক্তির বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে। এই বাস্তবতায় উপযুক্ত নীতি-কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ পুরুষের সমপর্যায়ে উন্নীত করতে পারলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অনেকখানি বাড়বে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে এবারের বাজেট প্রস্তাব ঘোষণা শুরু করেন।
বাজেট প্রস্তাবের বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, বাল্যবিবাহ রোধ, নারীশিক্ষা, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, কর্মজীবী মহিলাদের জন্য আবাসন, শিশু-দিবাযাপন কেন্দ্র স্থাপন, যুব মহিলাদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, চাকরিতে কোটা সংরক্ষণসহ নানা ধরনের নারীবান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। তিনি আশা করেন, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ে অর্জিত লিঙ্গ সমতার কারণে ভবিষ্যতে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ অনেকখানি বাড়বে। বিদেশেও নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকার সমভাবে সচেষ্ট। প্রতি মাসে ১০ হাজার গৃহকর্মী পাঠানোর বিষয়ে এরই মধ্যে সৌদি সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী সৌদি সরকার গৃহকর্মীদের সার্বক্ষণিক সহায়তার ব্যবস্থা নেবে।
অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাবে বলেন, নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে পারলে দেশের উৎপাদন সম্ভাবনা বহুলাংশে বাড়ানো সম্ভব হবে। ২০২১ সালের মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নারী উন্নয়ন ও কর্মসুযোগ সংক্রান্ত সকল প্রকল্প পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে গ্রহণ করা হচ্ছে নানামুখী কার্যক্রম। তৃণমূলের নারীদের পণ্য উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত একটি সাপ্লাই চেইনে (Supply Chain) বাণিজ্যিকভাবে সম্পৃক্ত করার জন্য জয়িতা ফাউন্ডেশন কাজ করছে। এর একটি প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জয়িতা কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হবে। আমরা নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য স্থায়ী উন্নয়ন কেন্দ্রও হোস্টেল নির্মাণেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ছাড়া, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ, ক্যাটারিং প্রশিক্ষণ, নারী আইসিটি ফ্রি-ল্যান্সারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের জন্য ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাজেটে নারীর হিস্যা তুলে ধরতে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে প্রকাশ হচ্ছে জেন্ডার বাজেট।