ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় ৩০ হাজার কোটি টাকা
সদ্য বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে হাওয়া লেগেছে প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) পালে। সরকারের নানা পদক্ষেপ, সচেতনতা ও প্রণোদনায় অন্যান্য যেকোন বারের চেয়ে ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছে। যা দেশের ইতিহাসে সেরা প্রবাসী আয় হিসেবে গন্য।
গত ডিসেম্বরে মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দেশে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩০ হাজার কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার ৬০০ টাকা (প্রতি ডলার ১২১ টাকা ২৭ পয়সা হিসেবে)। আজ রোববার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৪ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার ডলার বা ৩২ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার। যা আগের বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার।
গত ডিসেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭২ কোটি ২০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭৪ লাখ মার্কিন ডলার।
দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডিসেম্বর একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এই ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ডলার এসেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে আসা অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৬ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এরপর সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ডলার, ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৮ কোটি ৪৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
গত বছরের প্রথম দিকে প্রবাসী আয়ে ঊর্ধ্বগতি থাকলেও জুলাইয়ে তা নিম্নগতিতে নেমে আসে। গত জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার হলেও পরে তা বেড়ে গত জুনে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। কিন্তু পরে কমে জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
গত নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ আট লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৯ লাখ ৭০ হাজার এবং আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এর আগের জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ সাত লাখ ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মেতে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার এবং জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বৈধ পথে প্রবাসীদের টাকা পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর কারণে এখন হুন্ডি বা অবৈধভাবে টাকা পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। এতে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। হুসনে আরা শিখা বলেন, অর্থপাচার পুরোপুরি বন্ধ করা গেলে প্রবাসী আয় আরও বাড়বে।