বাণিজ্য মেলায় এবারের অন্যতম আকর্ষণ ‘রাজা চা’
গান বাজনার মাধ্যমে নানান ভঙ্গিতে এবারের বাণিজ্য মেলায় আসা চা প্রেমিকদের কাছে চা পরিবেশন করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে ‘রাজা চা’ নামের স্টল। এবারের মেলায় প্রায় সবারই নজর কেড়েছে এই স্টলের চা। কাজু-বাদাম, কাঠ-বাদাম, দুধ, মালাই, কফিমেট, কফি-মিশিয়ে নানা রকম চায়ের স্বাদ নেওয়া যাবে এই স্টলের চায়ে। রাজা চা প্রতি কাপ ৫০ টাকা। টোকেন না নিলে মিলবে না এই চা।
মেলায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চা প্রেমিকরা টোকেনের মাধ্যমে রাজা চা সংগ্রহ করেন। আড্ডাসূলভ পরিবেশে সাজানো হয়েছে স্টলটি। রয়েছে বিশেষ লাইটিং ব্যবস্থা। স্টলটির সামনে যেই যাচ্ছে, একবার হলেও চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে। রাজা চায়ের স্টলটির মালিক আজাহার উদ্দিন রাজা। বয়স ৫৩ বছর। সবার কাছে তিনি রাজা মামা হিসেবেই পরিচিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাণিজ্য মেলায় আসা দর্শনার্থী ও চা প্রেমিকরা আজাহার উদ্দিন রাজার সঙ্গে সেলফি তুলছেন। আবার অনেকেই সেলফি তোলার অপেক্ষায় আছেন। তিনিও নানা রঙ্গরসে হাসিমুখে সেলফি তুলছেন। গল্প করছেন। চা পরিবেশন করছেন।
মেলায় আসা লোকদের চা পরিবেশন করে বেশ খুশি জানিয়ে আজাহার উদ্দিন রাজা বলেন, ‘মেলার শুরু থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি। চা প্রেমিকদের জন্য আমার এই স্টল। তাদের কথা মাথায় রেখে চায়ের স্বাদে বিভিন্ন রকম করা হয়।’
মেলায় নরসিংদী থেকে আসা দর্শনার্থী হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘রাজা চায়ের গল্প অনেক শুনেছি। তাই আজ মেলায় চলে আসছি নিজেই, চা পান করতে।’ ওয়ারী থেকে আসা আরেক চা প্রেমিক চয়ন বলেন, ‘দুর থেকে দেখে ভেবেছি সাধারণ চা হবে। দেখছি সবাই খুশিতেই চা পান করছে। কৌতুহলি হয়ে আমি চা পেতে টোকেন সংগ্রহ করি, পরে লাইনে দাঁড়িয়ে চা গ্রহণ করি। চা পান করে এখন বলছি, চা সত্যিই অসাধারণ। স্বাদও ভাল।’
রাজা চা আগেও কয়েকবার পান করেছেন জানিয়ে ধানমণ্ডি থেকে আসা রুমা আবিদ বলেন, ‘মেলায় এসে শুনেছি, রাজা চায়ের স্টল আছে। খুঁজতে কষ্ট করতে হয়েছে। কারণ আমি ভেবেছি, স্টলটি মেলা প্রাঙ্গণের সামনেই হবে। কিন্তু এতো ভেতরে হবে. বুঝতে পারিনি। অবশেষে খুঁজে পেয়েছি। অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে চাও পেয়েছি। পান করেছি। এখন শান্তি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজা চা আমার সব সময় ভাল লাগে। কারণ বাদাম, দুধ, কফিসহ নানা রকম চায়ের স্বাদ একটার মধ্যেই পাওয়া যায়। পুরো অন্য রকম।’
দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় (২০২৫) এবারে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। আর বাকি ১১টি স্টল সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।
এবারের বাণিজ্যমেলা সাজানো হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান থিমে। এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ জুলাই চত্বর ও নামাজ ঘর রয়েছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।