ছুটির দিনে জমজমাট বাণিজ্যমেলা
জমে ওঠেছে এবারের ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারী) দুপুরের পর থেকে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে মানুষের ঢল নামে। মেলার প্রতিটি প্যাভিলিয়ন-স্টলে ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। এ সময় ঘুরে ঘুরে পছন্দ মতো কেনাকাটা করতে দেখা যায় তাদের।
মানুষের উপস্থিতি দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ ক্রেতা-দর্শনার্থী ভিড় অনেক বেশি। ক্রেতাদের পণ্য দেখাতে দেখাতে শ্বাস নেওয়ার সময় পাচ্ছি না।
আজ শুক্রবার দুপুর থেকেই মেলায় দর্শনার্থীদের প্রবেশ বহুগুণ বেড়ে যায়। বিকেলে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। এতে মেলার প্রতিটা প্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স, ফার্নিচার, কার্পেট, গরম কাপড়, খাবার প্যাভিলিয়ন-স্টলগুলোতে মানুষের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো।
কোনাপাড়া থেকে মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন রুবেল। তিনি বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টায় বাণিজ্য মেলায় এসেছি। তখন লোক ভালই ছিল। কিন্তু জুমার নামাজের পর থেকে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। এখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা বাজে, মানুষের ভিড়ে শ্বাস ফেলতে পারছি না। ভাবছি পরিবার নিয়ে মেলা থেকে বের হয়ে যাব।’
মেলায় বসুন্ধরা এলাকা থেকে ঘুরতে এসেছেন সুমাইয়া, সঙ্গে রয়েছে তার ছয় বন্ধু। সুমাইয়া বলেন, ‘বন্ধুদের নিয়ে বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে এসেছি দুপুর ৩টায়। মেলায় প্রবেশের সময় দীর্ঘলাইন ধরতে হয়েছে। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। ভিড়ের কারণে মেলায় ঢুকতে কষ্ট হয়েছে। তবুও বন্ধুদের নিয়ে মেলা ঘুরে দেখেছি।’
জুলাই শহীদদের স্মরণে মেলায় জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বরের আয়োজন প্রশংসনীয় জানিয়ে জুলফিকার রনি বলেন, ‘এই দুই চত্বর মেলায় দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আজকে মানুষের ভিড়ের কারণে ঠিক মতো দুই চত্বর ঘুরতে ও ছবি তুলতে পারিনি। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদেরকে তো আর পাব না। কিন্তু তাদের ছবির সঙ্গে নিজের ছবিগুলো স্মৃতি করে রাখতে চাই। তাই ভাবছি, দুই-তিন পর ফের আসবো।’
দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় (২০২৫) এবারে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। আর বাকি ১১টি স্টল সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।
এবারের বাণিজ্যমেলা সাজানো হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান থিমে। এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ জুলাই চত্বর ও নামাজ ঘর রয়েছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।