ছাত্রলীগের নেতাসহ ঢাবির তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
ডিজিটাল জালিয়াতি ও অবৈধ পন্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হওয়ায় সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত দুজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক আকতারুল করিম রুবেলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৭২ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের এক সভায় বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃতরা হলেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. রাকিব হাসান ও ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ইশরাক হোসেন রাফি। তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়টি পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে।
সভায়, আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মো. আকতারুল করিম রুবেলকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে ‘কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না’-এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সংগঠনের নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৮ জুলাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আকতারুল করিম রুবেলকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
চাঁদাবাজি ও পেটানোর অভিযোগে করা মামলায় আকতারুল করিম রুবেলকে একদিনের রিমান্ড শেষে গত ২৯ জুলাই কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ওয়ার্ড বয় মনির হোসেন ও তাঁর দুই সহকর্মী গত ২৬ জুলাই সকালে নাস্তা করতে হাসপাতাল থেকে আনন্দবাজার খাবার হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে পাকা রাস্তার ওপর ছাত্রলীগনেতা রুবেল ও তাঁর সহযোগীরা পথরোধ করে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাঁরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রুবেল ও তাঁর সহযোগী আসামিরা মনিরকে কাঠ ও রড নিয়ে হাত, পা, মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে সজোরে আঘাত করে এবং কিল, ঘুষি মারতে থাকেন৷
এ সময় মনিরের সহকর্মীরা তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আসামিরা তাঁদেরকেও এলোপাতাড়িভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাঠ ও রড দিয়ে পিটিয়ে আঘাত করেন এবং কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের কর্মচারীরা এগিয়ে এসে আসামি আকতারুল করিম রুবেলকে আটক করতে সক্ষম হন। অপর আসামিরা পালিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রুবেলকে হেফাজতে নেয়।