জবির ছাত্রী হলে ডায়রিয়ার প্রকোপ, পাঁচ দিনে অসুস্থ ৫৮
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে পাঁচ দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—অনিরাপদ পানি এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারসূত্রে জানা যায়, পাঁচ দিনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৫৮ ছাত্রী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত ১৫ জন, মঙ্গলবার ১৪, সোমবার ১২ ও রোববার ১২ ছাত্রী চিকিৎসা নেনে।
আজ বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রী হলের পাঁচ জন শিক্ষার্থী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সেন্টার থেকে ডায়রিয়ার প্রাথমিক ওষুধ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাঁদের অবস্থা গুরুতর, তাঁরা কাছের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শামসুন নাহার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার রুমের চার জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আমি শুধু হলের খাবার ও পানি খাই। বাইরে কিছু খাই না। এখন হলের পানি, খাবার থেকে এ সমস্যা হতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্নি আক্তার বলেন, ‘হলে কয়েকটি তলায় অনেকের ডায়রিয়া হয়েছে। ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে প্রচুর আয়রন পাওয়া যাচ্ছে। এ পানি দিয়ে হলের ডাইনিংয়ে রান্না করা হয়। এ কারণে রান্না করা খাবার লাল রঙের হয়ে যায়। শুরুর দিকে হলের মেয়েরাও এ পানি পান করতেন। এ কারণে ডায়রিয়ার মতো রোগ বাড়ছে বলে আমার মনে হয়।’
মুন্নি অভিযোগ করেন, ‘পুরো হলে নিচতলার ডাইনিংয়ে মাত্র একটি ফিল্টার আছে।’
হল ডাইনিংয়ের প্রধান পরিচালক নূর মোহাম্মদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, হলের প্রধান সমস্যা নিরাপদ পানি। পানি কিছুক্ষণ গ্লাসে রাখলেই আয়রনের কারণে লাল হচ্ছে। গ্লাস ও জগে কয়েক দিনের মধ্যে আয়রন পড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিরাপদ পানি এনে রাখার মতো ব্যবস্থা আমাদের ডাইনিংয়ে নেই।’
জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট শামীমা বেগম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যাঁদের ডায়রিয়া হয়েছে, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আমরা হল পরিদর্শন করেছি। ছাত্রীদের অপরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও নজরে এসেছে। সুস্থ থাকতে নিজেদেরও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।’
প্রভোস্ট আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা শুধু শুধু অভিযোগ করছে, পানি ঘোলা ও গন্ধ করছে। আমরা দেখতে পেয়েছি, পানি পরিষ্কার। তাঁরা যেহেতু নতুন এসেছে, তাই মানিয়ে নিতে হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে। প্রতিটি তলায় পানির ফিল্টার বসানো হবে।’