ঢাবি হলের কক্ষে মাদক সেবন, দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতাদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া চলে। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এই ঘটনা ঘটে।
হল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। হলের ৩১ নম্বর কক্ষে গাঁজা সেবন নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘণ্টা উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ সময় হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগের পদধারী কয়েকজন নেতা বলেন, ৩১ নম্বর রুমে আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান শাহিদ তন্ময় তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গাঁজা সেবন শুরু করলে একই কক্ষে থাকা লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. কিবরিয়া হাসান নিষেধ করেন। এরপর একই কক্ষে থাকা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম নওশাদ আবারও নিষেধ করলে তার উপর চড়াও হন তন্ময়। এ খবর পেয়ে মাইনুলের সিনিয়র বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারীরা দেশি রামদা, রড, স্ট্যাম্প নিয়ে ৩১ নম্বর কক্ষের সামনে আসেন। একই সঙ্গে তন্ময়ের সিনিয়র ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সেখানে জড়ো হন। এরপর হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেলসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
তারা জানান, হলের ৩১, ৭৯, ১৭৭ ও ১৪৯ নম্বর রুমে নিয়মিত মদ ও গাঁজার আসর বসে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বিঘ্ন ঘটলেও হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী মিসাত বলেন, ‘এক কক্ষে বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কিছু ঝামেলা হয়েছিল। আমরা সিনিয়রেরা গিয়ে সেটা মিটমাট করে দিয়ে এসেছি।’
‘গাঁজা খাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী আতিক রায়হান বলেন, ‘পলিটিক্যাল কক্ষগুলোতে ইয়ারমেটদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। লাইট অফ-অন, সিগারেট খাওয়া নিয়ে মাঝে-মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এটা সেরকমই একটি বিষয়। রড, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে কোনো মহড়া হয়নি।’
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মুজিবর রহমান বলেন, ‘আমি হাউজ টিউটরদের বলে দিয়েছি বিষয়টি দেখার জন্য। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে বা ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। রুমগুলোতে কারও ব্যক্তিগত কোনো দেশিয় অস্ত্র, রড, রামদা আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এমন কিছু ঘটে থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’