পরীক্ষা না নেওয়ার সুপারিশ ঢাবির কলা অনুষদের, সিদ্ধান্ত নেবে ডিনস কমিটি
প্রস্তুতি থাকার পরও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ। অনুষদভুক্ত বিভাগের চেয়ারম্যানদের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের বিষয়টি ডিনস কমিটিতে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।
এর আগে কলা অনুষদের ছয়টি বিভাগ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এসব বিভাগ তাদের সুবিধামতো তারিখও ঘোষণা করে। বিভাগগুলো হচ্ছে- আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, ইংরেজি, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি এবং ফারসি।
সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কলা অনুষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভা করেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। সভায় প্রায় সব বিভাগের চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেন। এটা আগামী ১৩ জানুয়ারি ডিনস কমিটিতে সুপারিশ আকারে উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
সভার বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল হুদা আবুল মনসুর বলেন, ‘পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত কোনো পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে পরীক্ষা স্থগিত হবে কি না এ ব্যাপারে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।’
ড. নুরুল হুদা আবুল মনসুর আরো বলেন, ‘আমরা বৈঠকে ডিন মহোদয়কে শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা ও দাবি-দাওয়া সম্পর্কে অবহিত করেছি। পরবর্তীতে ডিনস কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরীক্ষার একটা তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে চাচ্ছে না; তাই আমার ডিপার্টমেন্ট ছাড়া কলা অনুষদের অন্য ষোলটি বিভাগই পরীক্ষা না নেওয়ার অনুরোধ করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে না পারা এবং অন্য বিভাগগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি।’
ডিনস কমিটির সভায় সেমিস্টার পরীক্ষা না হলেও মূল্যায়ন প্রেজেন্টেশন, ক্লাস অ্যাটেনডেন্স, অ্যাসাইনমেন্ট এগুলো চলমান থাকবে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, কলা অনুষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে উপস্থিত অধিকাংশ চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা না নেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করেন। আমি আগামী ডিনস কমিটির সভায় এসব সুপারিশগুলো তুলে ধরব। ডিনস কমিটি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে।’
এদিকে, পরীক্ষার আগে হল খোলার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। অন্যদিকে, ছাত্রলীগ, ছাত্রদলসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও হল খোলা ছাড়া পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।