বিজয়ের মাসে শুরু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠান
বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগামী ১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও শতবর্ষের ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হবে। এ ছাড়া, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থ, ফটোগ্রাফি অ্যালবাম ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি এ কে আজাদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও শতবর্ষ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল স্বাগত বক্তব্য রাখবেন। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় চ্যান্সেলরকে বিশেষ স্যুভেনির প্রদান করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ওই দিন বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। উৎসবের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দিন যথাক্রমে ২ ডিসেম্বর, ৩ ডিসেম্বর ও ৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিকেল ৪টায় আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
এসব আলোচনা সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও অ্যালামনাই অংশগ্রহণ করবেন। প্রথিতযশা শিল্পী ও সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিল্পী ও অ্যালামনাই সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবেন।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খ্যাতিমান শিল্পীদের ‘কনসার্ট’ পরিবেশনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের সমাপ্তি হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এটি একটি প্রত্যাশিত বিষয়। দক্ষ নেতৃত্ব, মানবসম্পদ তৈরির জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি। তিন দশক পর যখন ডাকসু নির্বাচন হলো তার মধ্যে হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদ সব মিলিয়ে সাড়ে তিনশর অধিক তরুণ বৃদ্ধিদীপ্ত শিক্ষার্থী কাজ করেছিল। এরমধ্যে অনেক দক্ষ নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ হয়েছিল। সেজন্য সেটি খুবই প্রত্যাশিত বিষয়। এজন্য সব মহলের আন্তরিক সহযোগিতা থাকা দরকার।
জাতীয়ভাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সংস্কৃতি চর্চা শক্তিশালী করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটি অনেক সময় বড় রকমের ধাক্কা খায়। ফলে সবকিছু মিলে এগুলো বিবেচনায় নিয়েই মূলত এ ধরনের বড় কর্মপ্রয়াস গ্রহণ করতে হয়। আমরা যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলাম সেটিকে আরও অর্থবহ করার জন্য এই বিষয়গুলো জরুরি।