প্রক্টরের অপসারণ দাবি কুবি শিক্ষক সমিতির
প্রক্টরের অপসারণসহ তিন দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতি সংবাদ সম্মেলন করেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সমিতি নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্যের কক্ষে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির ওপর হামলায় জড়িত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অছাত্র, বহিরাগত, সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে তদন্তপূর্বক প্রশাসনিক ব্যবস্থাগ্রহণ করা এবং অবিলম্বে প্রক্টরের অপসারণ।
শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, গতকালের (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষকদের হেনস্তার ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডি নিষ্ক্রিয় ছিল। প্রক্টরিয়াল বডি অছাত্র, সন্ত্রাসীদের উপাচার্য দপ্তর থেকে বের করেনি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়নি। আমরা মনে করি, প্রক্টরিয়াল বডি সচেতনভাবে এ হামলার সঙ্গে জড়িত। আমাদের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে না নিলে মনে করব, প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাই এ হামলার সঙ্গে জড়িত।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আগের তুলনায় অনেক নিরাপদ আছে। যারা অভিযোগ করছে তারা কী ধরনের অনিরাপত্তায় ভুগছে সেটা আমাকে লিখিতভাবে জানায়নি। তাদের দাবির বিষয়েও আমাকে লিখিতভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে কুবি উপাচার্য বলেন, তারা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে একজন শিক্ষকের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাদের যদি কোনো বিষয়ে আপত্তি থাকতো তাহলে তারা আমাকে লিখিতভাবে জানাতে পারত। সেটি না করে তারা শহীদ মিনারেই আমাকেসহ অন্য শিক্ষকদেরকে হেনস্তা করছে। একজন শিক্ষক হয়ে অপর শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করানো হুমকি দিয়েছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। গতকালের ঘটনায় উল্টো আমি নিজে অনিরাপদ আছি বলে মনে করি। তারপরও আমি তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।
এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতারা। সে সময় উপাচার্য দপ্তরে বাকবিতণ্ডায় জড়ান শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাকবিতণ্ডার আওয়াজ শুনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও উপাচার্য দপ্তরে জড়ো হয়। তখন শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েক দফায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও কর্মকর্তাদের বাকবিতন্ডা হয়। সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই ঘন্টা আলোচনা শেষে বেরিয়ে যান। এ ঘটনায় শিক্ষকরা হেনস্তার শিকার অভিযোগে সদর দক্ষিণ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।