কুবিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পদত্যাগের হিড়িক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন।
গতকাল সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ১০টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দেওয়ার মাধ্যমে এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ও পদত্যাগ করার ঘোষণা অব্যাহত আছে।
পদত্যাগকারী নেতাকর্মীরা জানান, সারা দেশের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ অতর্কিত হামলা চালায়। এই ঘটনায় তারা নিন্দা জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।
পোস্টে এক পদত্যাগকারী লেখেন, ‘অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম এটা জেনে যে, ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে। তবে বর্তমান ছাত্রলীগ যা বোঝাল, এতে এই মুহূর্ত থেকে আমি আর কোনোভাবেই ছাত্রলীগের কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে প্রথম পদত্যাগকারী নুসরাত জাহান সুরভী বলেন, ‘আপনিও মানুষ, আমিও মানুষ। আপনিও জানেন দেশে কি হচ্ছে। সেই মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি শাখা ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছি।’
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দিন তার ফেসবুকে লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ছাত্র রাজনীতি ছিল আমার পছন্দের জায়গা, ভালোবাসার জায়গা। আজকের পর থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কেউ আমাকে ডাকবেন না, ধন্যবাদ।’
আরেক পদত্যাগকারী লেখেন, ‘আমি রাহিলাতুল শবনম মিম। আমিসহ নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের ১৬তম ব্যাচের সব পলিটিক্যাল মেয়ে ছাত্রলীগ থেকে ইস্তফা দিলাম। আজ থেকে লীগের কোনো প্রোগ্রামে আমরা যাব না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সামিন বখশ সাদী বলেন, ‘প্রথমবর্ষ থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ছাত্র রাজনীতি ছিল আমার পছন্দের জায়গা। কিন্তু, আজকের এই ঘটনার পর আমার মনে হয় না এরকম কেনোকিছুর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন।’
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতাকর্মী তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।