১৯ বছরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
লালমাটির পাহাড় ঘেরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (২৮ মে)। ২০০৬ সালের ২৮ মে শালবন বিহারের কোল ঘেঁষে দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে কুবি। এই দীর্ঘ সময়ে নানা অর্জন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদানের মাধ্যমে গৌরবোজ্জ্বলভাবে স্বমহিমায় উজ্জ্বল দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয়টি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
২০০৭ সালের ২৮ মে প্রথম আবর্তনে সাতটি বিভাগে ৩০০ শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছয়টি অনুষদ ও ১৯টি বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আত্মউন্নয়ন ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, থিয়েটার, অনুপ্রাস- কণ্ঠ চর্চাকেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়া জাতিসংস্থা, প্রতিবর্তন, ইএলডিসি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবসহ বেশ কিছু সক্রিয় সংগঠন। ২০১৩ সালে শিল্পী হাশেম খান ও শিল্পী রবিউল হুসাইনের যৌথ পরিকল্পনায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশেই স্থাপিত হয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটি শিল্পী মৃণাল হক কর্তৃক ২০১৭ সালে নির্মিত হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে শিক্ষার্থীদের রয়েছে অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী বিএম সুমন বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কিছু অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তা অচিরেই দূর করতে সরকারের উচ্চপর্যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে আশা করছি।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আশশিফা আক্তার বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। আমরা সেশনজটে পড়েছি, আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও হচ্ছে না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আমাদের ক্লাস-পরীক্ষাগুলো নিয়মিত নেওয়া হোক।
১৯তম বছরে পদার্পণ নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘প্রতিবছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করে থাকি। এ বছর উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করব।’
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মেরিট বৃদ্ধির জন্য ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড চালু করেছি। উন্নত মানের শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি,বলেন উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন।