মনোনয়ন পাননি তিন প্রতিমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোয়ন পাননি বর্তমান মন্ত্রিসভার তিন প্রতিমন্ত্রী। তারা হলেন—প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, তিন বারের সংসদ সদস্য ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ওবায়দুল কাদের। পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। সেখানে এই তিন প্রতিমন্ত্রীর নাম দেখা যায়নি।
মনোনয়ন না পাওয়া প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে তিনি দ্বিতীয় বারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. বিপ্লব হাসান।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের খুলনা-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯-২০১৪ মেয়াদে তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪-২০১৮ মেয়াদে তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। একদশ জাতীয় সংসদেও তিনি শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। খুলনা-৩ আসনে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম কামাল হোসেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ময়মনসিংহ-৫ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় একই আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে তিনি শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. আব্দুল হাই আকন্দ।
গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন দিন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ২৯৮ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করে। বাদ থাকে কুষ্টিয়া-২ ও নারায়ণগঞ্জ-৫। আজ সকালে সব কয়টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন দলের সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর বিকেল ৪টার পর মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন দলীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য সচিব ওবায়দুল কাদের।
এর আগে ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। সে হিসেবে আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। এ নির্বাচন উপলক্ষে ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার পর ১৮ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন বিক্রি করে দলটি। এবার মোট তিন হাজার ৩৬২ মনোনয়নপত্র বিক্রি করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে ১২১টি অনলাইনে ও তিন হাজার ২৪১টি মনোনয়নপত্র সরাসরি বিক্রি হয়।
তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর। এরপর মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর এই মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি করা হবে ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর।
অন্যদিকে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচারণা চালানো যাবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনের দুই দিন পূর্ব, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১ কেটি ৯৭ লাখ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার। মোট দুই লাখ ৬২ হাজার বুথে ভোটগ্রহণ চলবে।