চট্টগ্রামের সেই পরিচ্ছন্নকর্মীকে পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মী নাহিদুল ইসলামকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে তথ্য গোপন করে রাষ্ট্রীয় কাজে কোন ধরনের অনিয়ম করবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন।
চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তাফা কামাল এনটিভিকে জানান, আমরা যে তথ্য অনুযায়ী তালিকা করেছি সেখানে পরিচ্ছন্নকর্মীর নাম নেই। তবে প্রধান শিক্ষক অফিস সহকারী দেখিয়ে পরিচ্ছন্নকর্মীকে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেছিলেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে মূলত ওই পরিচ্ছন্নকর্মী প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বিষয়টি জানার পর পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে নাহিদুল ইসলামকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম তথ্য গোপন করার কারণে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে এরকম কাজ না করার অঙ্গীকারও করেছেন।
এনটিভি অনলাইনে গত ২৩ ডিসেম্বর ‘চট্টগ্রামে স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মীকে পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ’ শিরোনামে সংবাদটি প্রচারের পর প্রশাসনসহ স্কুল কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। খবরে উল্লেখ করা হয়, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মী নাহিদুল ইসলাম কয়েক মাস আগে নিয়োগ পেয়েছে সুইপার পদে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পোলিং কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় নাহিদুল ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্কুলের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস জাহান চৌধুরী অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থান করছেন। তার স্থলে অফিস সহকারী নাহিদুল ইসলামকে পোলিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে অনুরোধ করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুইপারের পদ পরিবর্তন দেখিয়ে সুইপারকে পোলিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে শিক্ষকরা নিষেধ করলেও প্রধান শিক্ষক ইচ্ছে করে করেছেন বলে জানান প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা।
গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার আবেদনটি প্রেরণ করা হয়। ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নেয় পরিচ্ছন্নকর্মী নাহিদ। নগরীর মহিলা সমিতি স্কুল ও কলেজের ৩০৫ নং কক্ষে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানে অংশ নেয় স্কুলের সুইপার নাহিদ। নির্বাচন কমিশনের এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের আরও ৪০ জন শিক্ষক অংশ নেন। বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নকর্মী শিক্ষকদের সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণে ক্ষুব্ধ হলেও স্কুলের শিক্ষকরা কোন অভিযোগ করতে পারেননি। কারণ সবাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের ভয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের প্রবীণ ও মেধাবী শিক্ষকদের সাথে সুইপারের পদ পরিবর্তন করে অফিস সহকারী দেখিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু জানান, পরিচ্ছন্নকর্মী স্নাতকোত্তর পাস হলেও পদের কারণে তাকে দায়িত্বশীল কাজ দিতে পারে না। এটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা।