ভোটের হারে এগিয়ে শেখ হাসিনা, পিছিয়ে কামাল মজুমদার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ নির্বাচনে ২৯৮ আসনে মোট ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ ফলাফল নিয়ে কারও সন্দেহ থাকলে চ্যালেঞ্জ করারও আহ্বান জানান তিনি।
মাঠপর্যায় থেকে আসা কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) আসনে। আসনটিতে দুই লাখ ৪৯ হাজার ৯৬২ ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর। তিনি ৪৬৯ ভোট পেয়েছেন।
আর সবচেয়ে কম ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ভোট পড়েছে ঢাকা–১৫ আসনে। তিন লাখ ৪৪ হাজার ৫০৭ ভোটারের এই আসনে ৩৯ হাজার ৬৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। সে হিসেবে তিনি পেয়েছেন ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুল হক লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ৪৪ ভোট।
এ ছাড়া ভোট পড়ার হারের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গোপালগঞ্জ-২ আসন। এই আসনে ৮৩ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলুল করিম সেলিম পেয়েছেন দুই লাখ ৯৫ হাজার ২৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির কাজী শাহিন পেয়েছেন এক হাজার ৫১৪ ভোট।
ভোট পড়ার হারে উল্লেখযোগ্য যেসব আসন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী এ বি তাজুল ইসলাম পেয়েছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৮৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির আমজাদ হোসেন সিদ্দীক পেয়েছেন দুই হাজার ৮১৭ ভোট। এই আসেন ভোটের হার ৭৬ শতাংশ।
নোয়াখালী-৬ আসনে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী পেয়েছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুশফিকুর রহমান পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৩৬ ভোট। এ আসনে ভোটের হার ৬৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
চট্টগ্রাম-৬ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী পেয়েছেন দুই লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী শফিউল আজম পেয়েছেন তিন হাজার ১৫৯ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৭৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম-৭ আসনে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ পেয়েছেন এক লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হাসান পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বান্দরবান আসনে নৌকার প্রার্থী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং পেয়েছেন এক লাখ ৭২ হাজার ৬৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এ টি এম শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৬১ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বাগেরহাট-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ হেলাল উদ্দিন দুই লাখ ১৯ হাজার ৯৩৯ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২১০ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
বাগেরহাট-২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ তন্ময় এক লাখ ৮২ হাজার ৩১৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজরা সহিদুল ইসলাম পেয়েছেন চার হাজার ১৭৪ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৪ দশমিক ৩১ শতাংশ।
কুমিল্লা-৭ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রাণ গোপাল দত্ত পেয়েছেন এক লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুমতাকিম আশরাফ পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৬৮ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কুমিল্লা-৮ আসনে নৌকার প্রার্থী আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন পেয়েছেন দুই লাখ ৭০৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির এম ইরফান পেয়েছেন তিন হাজার ৭২১ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ফেনী-২ আসনে নৌকার প্রার্থী নিজাম উদ্দীন হাজারী পেয়েছেন দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী পেয়েছেন চার হাজার ৮৫৮ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
গোপালগঞ্জ-১ আসনে ভোট পড়েছে ৬১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খান পেয়েছেন এক লাখ ১৮ হাজার ৭৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কাবির মিয়া পেয়েছেন এক লাখ আট হাজার ৯৩৪ ভোট।
বাগেরহাট-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের এইচ এম বদিউজ্জামান এক লাখ ৯৯ হাজার ৩৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের জামিল হোসাইন পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৭৬ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
জামালপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীকের নূর মোহাম্মদ দুই লাখ ২৮ হাজার ২৪৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু সায়েম পেয়েছেন ছয় হাজার ৭০ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
ফরিদপুর-৪ আসনে ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান চৌধুরী এক লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের কাজী জাফর উল্লাহ পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৬০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
রাঙ্গামাটি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দীপংকর তালুকদার পেয়েছেন দুই লাখ ৭১ হাজার ৩৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী ভোট পেয়েছেন চার হাজার ৯৬৫ ভোট। এই আসনে ভোটের হার ৫৯ দশমিক ৬০ শতাংশ।