এক মাস পর এফডিসিতে জায়েদ খান, শিল্পী সমিতিতে তালা
এক মাস পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) প্রবেশ করলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। আজ বুধবার বিকেল ৫টার কিছুক্ষণ আগে জায়েদ খান এফডিসিতে প্রবেশ করেন। তবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যালয় তালাবদ্ধ দেখা গেছে।
আজ দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণাকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত।
এই রায়ের ফলে আজ থেকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের বসতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন জায়েদ খানের আইনজীবী।
এমন রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদ খান হাইকোর্টে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘রায়ে আমি খুশি, প্রথমে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই, এর পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই; কেননা তাঁর শাসনামলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমি আইনজীবী, মিডিয়া, ভক্ত সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে জানিয়ে জায়েদ খান বলেন, ‘আমার কার্যক্রম, জনপ্রিয়তা তাদের ঈর্ষার কারণ। তারা আবার আটকানোর চিন্তা করবে এই রায়কে। তারা প্রক্রিয়া চালাবে শুধু কাজ বন্ধ করে। আমি যে নির্বাচিত, আমাকে যে দুই বছর কাজ করতে দেবে, সেটা না দিয়ে এটাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে।’
জায়েদ খান আরও বলেন, ‘চেয়ার দখলের খেলা বন্ধ করতে হবে। এগুলো দেখে মানুষ হাসে। দেখতে দেখতে দুই বছর চলে যাবে। শিল্পীরা হচ্ছে ফুলের মতো।’
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নিপুণ আক্তার পান ১৬৩ ভোট। এরপর টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ একাধিক অভিযোগ আনেন নিপুণ। পরে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডে আবেদন করেন নিপুণ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার দায়ে বিজয়ী প্রার্থী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। একই সঙ্গে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন।
আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন জায়েদ খান। ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এক সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নিপুণ। ৯ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার আদালত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থাও বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুল হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।