বিরাটের ব্যর্থতায় আবারো আক্রমণের শিকার আনুশকা
বিষয়টি আগে থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল। রানের পাহাড় মাথায় চাপিয়ে অনেকবারের মতো মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারত, সে সঙ্গে বিরাট কোহলি। ব্যস, আর কী লাগে! ভারতের ‘আবেগী’ ক্রিকেট-পাগলরা একেবারে ধুয়ে দিতে আরম্ভ করে দিলেন বলিউড নায়িকা ও কোহলির প্রেমিকা আনুশকা শর্মাকে। বিরাট কোহলি খেলায় খারাপ করলে তাঁর অবধারিত দায় এবারও আনুশকা শর্মার ওপরে চাপানো হয়েছে ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রকাশ করেছে এমনই কিছু টুইটবার্তা, যেখানে বরাবরের মতো আক্রমণাত্মক ভাষায় বিরাট কোহলির পারফরম্যান্সের জন্য দায়ী করা হয়েছে আনুশকা শর্মাকে।
ভারতের ক্রিকেটারদের সব সময়েই একটা দুশ্চিন্তা মাথায় চেপে থাকে। জিতলে হাততালি যতই জুটুক, হারলে কিন্তু ক্ষমা নেই! তবে সব সময়েই দেখা গেছে, তাঁদের চেয়ে অনেক বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় তাঁদের প্রেমিকা বা পরিবারের লোকজনকে। গেল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছিল আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের। সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিরাট কোহলি মাত্র এক রানে আউট হয়ে যান। এর পর থেকেই বিরাটের প্রেমিকা আনুশকার ওপরে চড়াও হন ভারতের ক্রিকেট-সমর্থকরা। ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে রাজপথে পোস্টার পোড়ানো কিংবা আক্রমণাত্মক কথা—সবকিছুরই লক্ষ্য ছিলেন আনুশকা! এবারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৪৩৯ রানের হিমালয়সম টার্গেট পেরোতে গিয়ে ২২৪ রানেই অলআউট টিম ইন্ডিয়া, বিরাটের সংগ্রহ মোটে ৭। সঙ্গে সঙ্গে আবারো আনুশকার মুণ্ডুপাতে ব্যস্ত অনেকেই।
পূজা মিশ্র নামের একজনের টুইট, ‘বিরাটের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে এখন রাহানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার কথা ভাবছে আনুশকা!’ জনৈক সাকেত আলোনির কথা, ‘শাহরুখ খানকে নিষিদ্ধ করার বদলে এমসিএর (মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন) উচিত আনুশকা শর্মাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা।’ কবির নামের এক ব্যবহারকারীর টিপ্পনী আরো কড়া, ‘শেষের দুই বলে আনুশকা যে এক্সপ্রেশন দিল, পুরো ফিল্মি ক্যারিয়ারেও তো এমন এক্সপ্রেশন দিতে পারেনি!’ এ ছাড়া অন্যান্য টুইটবার্তায় আনুশকাকে স্টেডিয়ামে আসতে নিষেধ করা, বাসায় বসে খেলা দেখার পরামর্শ এবং অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে জড়িয়ে আপত্তিকর কথা বলা হয়।
তবে এর বিপরীতও খানিকটা দেখা গেছে বটে! বিনীত বাগদাই নামের একজন লিখেছেন, ‘বিরাটের পারফরম্যান্সের জন্য আনুশকাকে দোষারোপ করা একেবারেই অবান্তর!’ সুমিত সৌরভ লিখেছেন এভাবে, “বিরাটের খারাপ পারফরম্যান্সের দায় আনুশকার ওপর, অথচ ‘বোম্বে ভেলভেট’ ফ্লপ করায় কেউ কিন্তু বিরাটকে দোষ দেননি!” এ ছাড়া অনেকেই আনুশকাকে আক্রমণ করার বিষয়টিকে অযাচিত, অপ্রাসঙ্গিক এবং বাজে আচরণ হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
আনুশকা শর্মা বা বিরাট কোহলি, দুজনেই এ বিষয়টির সঙ্গে এত দিনে নিশ্চয়ই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন! বিশ্বকাপের ঘটনার পর ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আনুশকা বলেছিলেন, ‘আমরা দুজনেই এসব গ্রাহ্য করি না। কাজের বাইরের কিছু হলে এটা কোনো সমস্যা নয়। এটা আপনার সম্পর্কে কোনো বাজে প্রভাব ফেলবে না। বিরাট আর আমি, দুজনেই শক্ত মানসিকতার। তবে এ ধরনের বিষয় কাজের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। বিরাট নিজের কাজে সব সময়েই মনোযোগী। বিরাট খারাপ করলেই সব দোষ আমার! সব দায় আমার ওপরে এসে পড়ে। এর কিছুই আমার মাথায় ঢোকে না। কিন্তু এসবের কিছুই আমাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে না।’