যুদ্ধ নিয়ে সেরা ১০ চলচ্চিত্র
এ দেশের স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিল আজকের দিন থেকে। শুরু হয়েছিল প্রতিরোধের যুদ্ধ, শুরু হয়েছিল অত্যাচারী শাসককে উৎখাত করার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। এই সংগ্রাম নিয়ে আমাদের দেশে তৈরি হয়েছে বহু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র। এই ছবিগুলো আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কে মনে করিয়ে দেয়। তেমনি বাংলাদেশের বাইরে নির্মিত কিছু যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয় ইতিহাসের বিভিন্ন জয় পরাজয়ের কথা। চলুন জেনে আসি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বিখ্যাত কিছু যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের নাম।
১. অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট (১৯৩০) : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি এরিক মারিয়া রেমার্কের বিখ্যাত উপন্যাস ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ এর চলচ্চিত্রায়ন। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন লেউইস মাইলস্টোন। ১৯৩০ সালে এই ছবিটি অস্কারে শ্রেষ্ঠ ছবি, শ্রেষ্ঠ পরিচালক এবং শ্রেষ্ঠ সিনেম্যাটোগ্রাফি- এই তিন ক্যাটাগরিতে অস্কার পায়।
২. রোম, ওপেন সিটি (১৯৪৬) : ইতালির বিখ্যাত পরিচালক রবার্তো রোসেলিনির ‘রোম, ওপেন সিটি’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালীন অন্যতম সেরা এক ছবি। কান চলচ্চিত্র উৎসবে (১৯৪৬) শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার পেয়েছিল ছবিটি। এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন আরেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ফেদরিকো ফেলিনি, তাঁর সাথে সের্গিও আমিদি।
৩. দ্য ডেজার্ট ফক্স (১৯৫১) : জার্মানির ধূর্ত সেনানায়ক ফিল্ড মার্শাল রোমেলকে উপজীব্য করে নির্মিত এই ছবিতে দেখানো হয়েছে এই চৌকস সমরবিদের লড়াই। ছবির পরিচালক ছিলেন হেনরি হ্যাথাওয়ে। রোমেলের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জেমস ম্যাসন।
৪. ফ্রম হিয়ার টু ইটার্নিটি (১৯৫৩) : যুদ্ধ আর প্রেমের মিশেলে দুর্দান্ত এই ছবি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট আটটি অস্কার পেয়েছিল। ফ্রেড জিনারম্যান পরিচালিত এই ছবি কেবল বিখ্যাতই নয়, তুমুল আলোচিতও বটে! গায়ক ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রার পড়ন্ত ক্যারিয়ার আবার নতুন করে জাগিয়ে তুলেছিল এই ছবি।
৫. দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কওয়াই (১৯৫৭) : পিয়েরে বুলের বিখ্যাত ক্লাসিক উপন্যাস ‘দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কওয়াই’ থেকে নির্মিত এই ছবি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি অধ্যায়। সাতটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিল এই ছবি। সেরা পরিচালক হিসেবে ডেভিড লিন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা অ্যালেক গিনেস পেয়েছিলেন সেরার সম্মান।
৬. ব্যালাড অব আ সোলজার (১৯৫৯) : যুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানসূচক মেডেল না নিয়ে বদলে মায়ের সাথে দেখা করবার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে চারদিনের ছুটি নেয় এক যোদ্ধা। এই অসামান্য কাহিনী নিয়ে নির্মিত সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) পরিচালক গ্রেগরি চুখরাজের ‘ব্যালাড অব আ সোলজার’। ১৯৬২ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্য অস্কার পুরস্কার পায় ছবিটি।
৭. অ্যাপোক্যালিপস নাউ (১৯৭৯) : জোসেফ কনরাডের ‘হার্ট অব ডার্কনেস’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মাণ করা হয় এই ছবি। ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার অসাধারণ পরিচালনা পুরো সময় ধরে ছবিটিকে উপভোগ্য করে রেখেছে। ছবির শেষভাগে মার্লোন ব্র্যান্ডোর অন্তরাত্মা ঠাণ্ডা করে দেওয়া উপস্থিতিই বোধহয় ছবিটিকে অমর করে তুলেছে! পাঁচটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জেতে ছবিটি।
৮. দাস বুট (১৯৮১) : উলফগ্যাং পিটারসেনের বিখ্যাত ছবি। কাহিনীর ঘটনাকাল ১৯৪১। ছয়টি বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির ছবিটি, এ ছাড়া পুরস্কার পেয়েছে বহু চলচ্চিত্র উৎসবে-আয়োজনে।
৯. গুড মর্নিং ভিয়েতনাম (১৯৮৭) : ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস। এ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
১০. শিন্ডলার্স লিস্ট (১৯৯৩) : চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম যুদ্ধবিরোধী ছবি। স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত এই ছবি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট সাতটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিল।