চিত্রগ্রাহক ও প্রযোজক হারুন উর রশীদ আর নেই
বিশিষ্ট স্থিরচিত্র গ্রাহক ও প্রযোজক হারুন উর রশীদ গতকাল শনিবার, ২৮ মার্চ রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির রোগে ভুগছিলেন। হারুন উর রশীদ স্ত্রী, তিন কন্যাসহ বহু আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গতকাল বাদ আসর মিরপুরের ফকিরবাড়ী জামে মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুর ১১ নম্বর কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
মৃত্যুর কদিন আগে এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে হারুন উর রশীদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, ‘সাবধান! আমার জন্য অর্থের সাহায্য চেয়ে কোনো লেখা লিখবে না। জীবনে অনেক টাকা কামিয়েছি, আবার খরচও করেছি। যা কামাই করেছি তার বেশির ভাগই আমার চিকিৎসার পেছনে খরচ করছি; কিন্তু মানুষের সাহায্য নিয়ে একদিনও বাঁচতে চাই না।’ জীবন-সায়াহ্নে এভাবেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন রশীদ কথা বলেছিলেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
জীবনে অনেক ছবি তুলেছেন, কিন্তু সংগ্রহে রাখেননি কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে সেদিন রশীদ বলেছিলেন, ‘আমার তোলা ছবিগুলো যে কোনো দিন কাজে লাগবে, তা বুঝতে পারিনি। এখন জীবনের শেষে এসে বুঝছি, সংরক্ষণ করা প্রয়োজন ছিল।’
নতুন যারা কাজ করছে, তাদের প্রতি কোনো উপদেশ আছে কি না—জানতে চাইলে রশীদ বলেন, ‘কোনো উপদেশ নেই, তবে পরামর্শ আছে। কাজ করতে হবে মন থেকে, আমরা এটাকে কাজ মনে করতাম না। মনের খোরাক জোগাত এই ছবি। বর্তমানের ছেলেদের সেই ভালোবাসাটা কম। তবে আমি মনে করি, মন থেকে করলে সব কাজই ভালো হয়।’
হারুন উর রশীদ স্থিরচিত্র গ্রাহক হিসেবেই চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। পরে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। নির্মাণ করেন ‘ট্রাক ড্রাইভার’, ‘অধিনায়ক’ ও ‘লৌহমানব’ নামে তিনটি ছবি। প্রযোজক, স্থিরচিত্র গ্রাহক হারুন উর রশীদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ সিনে স্থিরচিত্র গ্রাহক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি এবং বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিমিটেড গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।