সমকামিতার জন্য নিষিদ্ধ ‘আন-ফ্রিডম’
পরিচালক রাজ অমিত কুমারের প্রথম ছবি ‘আন-ফ্রিডম’কে স্বাধীনতা দেয়নি ভারতীয় সেন্সর বোর্ড। সমকামিতা থাকায় এই ছবির যেকোনো প্রকারের প্রদর্শন নিষিদ্ধ হয়েছে ভারতে। পরিচালক নিজে চেষ্টা করেও সেন্সর বোর্ডের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন বলে জানা গেল টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজ অমিত কুমার ফ্লোরিডাতেই থাকেন। সেন্সর বোর্ডের এমন আচরণ তিনি হজম করতে পারবেন না, সেটাই স্বাভাবিক। এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে আবারও বিবেচনা করার আবেদন করেছেন তিনি। সেন্সর বোর্ডের এমন আচরণ তার কাছে ‘মানুষের মৌলিক অধিকার’ লঙ্ঘন করার মতো মনে হয়েছে।
‘আমি কিছু মানুষের স্বেচ্ছাচারিতা, ভণ্ডামি আর উদ্ভট আচরণের শিকার হচ্ছি- দেশে কোনো ছবিই নিষিদ্ধ করা উচিত নয় বলে মনে করি আমি। আপনি খুব বেশি হলে কড়া ধরনের কোনো রেটিং কিংবা কিছু দৃশ্য বা সংলাপ সংযোজন-বিয়োজনের নির্দেশ দিতে পারেন, সেটাও অবশ্যই পরিস্থিতি সাপেক্ষে’- হতাশা স্পষ্ট তাঁর কথায়।
এই ছবির কাহিনীতে সমকামিতা মুখ্য বিষয় হিসেবে এসেছে। নিউইয়র্ক এবং নয়াদিল্লির পটভূমিতে দুই নারীর একে অপরকে ভালোবাসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই ছবির গল্প। কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের কবিতা ‘ইয়ে দাগ দাগ উজালা’ এই ছবির কাহিনীর মূল অনুপ্রেরণা বলে জানা গেছে নির্মাতার ভাষ্যে। এ ছবিতে অভিনয় করেছেন ভিক্টর ব্যানার্জি, আদিল হুসাইন, প্রীতি গুপ্তা, ভবানি লি, অঙ্কুর বিকালসহ অনেকে।
অবশ্য সেন্সর বোর্ডের কথায় খানিকটা আশা পেতে পারেন রাজ অমিত কুমার। সেন্সর বোর্ডের পরীক্ষক কমিটি ছবিটিকে প্রদর্শনের সার্টিফিকেট দিতে রাজি না হলেও পুনর্বিবেচনায় আরেকটি কমিটি (রিভাইজিং কমিটি) একে ‘এ রেটিং’ (অ্যাডাল্ট বা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য) দেওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রেও বেশ কিছু দৃশ্য-সংলাপ ছেঁটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ছবির নির্মাতারা পুনরায় আবেদন করেছেন পরীক্ষক কমিটির রায়ের সাপেক্ষে। তবে শেষপর্যন্ত দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সেন্সর বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্যে আভাস মিলেছে।
‘আন-ফ্রিডম : ব্লেমিশড লাইট’ অবশ্য আগে ভারতের বাইরেই প্রদর্শিত হবে। উত্তর আমেরিকার প্রেক্ষাগৃহে ২৯ মে মুক্তি পাবে ছবিটি।
ভারতে ছবির ওপর সেন্সর বোর্ডের কড়া নজরদারি ইদানীং ভালোই বেড়েছে। এ নিয়ে আমির খানের মতো তারকারা পর্যন্ত তীব্র সমালোচনা করেছেন, তবে এসব যে সেন্সর বোর্ড বিশেষ আমলে নিচ্ছে না- তা তো বলাই যায়! বিশ্বজুড়ে আলোচিত ‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’ ছবিটিও ভারতে সেন্সর বোর্ডের নিষেধাজ্ঞায় আটকা পড়েছে।