ইফতারে কেন ছোলা খাবেন?
ছোলা জনপ্রিয় ডাল এবং পুষ্টিকর খাবার। রোজার ছোলা ভুনা মুড়ি দিয়ে মাখানো খাবার সবাই পছন্দ করে। এটি সারা বছর চাইলেই আপনি খেতে পারেন। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদ চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেব রমজান মাসে আপনি ছোলা কেন খাবেন।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজানে ছোলার বিভিন্ন গুণাগুণ সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ উম্মে সালমা তামান্না।
* ছোলা একটি ডাল এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার। এটি শরীরের জন্য খুবই জরুরি। বিশেষ করে দেহের পেশী গঠনের জন্য খুবই জরুরি। বিশেষ করে বাচ্চাদের খাবারে এটির তুলনা হয় না।
* রোজাতে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের ন্যায় অবশ্যই ছোলা রাখতে হবে। কারণ রোজার প্রতিদিন খাবার তালিকায় ছোলা রাখলে আপনারা বাড়তি শক্তি পেয়ে যাবেন।
* ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। যদিও এটি দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন। তবুও রমজানে এটি যদি একটু টকদইয়ের সাথে মিক্সড করে খেতে পারেন, তাহলে এটি প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের মতো কাজ করে।
* রমজানে ছোলা ভাজি বা ভুনা করে খাওয়া হয়। কিন্তু যদি কম তেল বা মসলাতে ছোলাটি খাওয়া যায়, তাহলে খুবই উপকারি।
* ছোলা সিদ্ধ করার পর টমেটো, শসা, গাজর, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ,তার সঙ্গে সাথে যদি টকদই দিয়ে মেখে খেতে পারেন, তাহলে এটি আপনার স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারি হবে।
* রমজানে ইফতার করার পর ক্লান্তিভাব চলে আসে। তাই ইফতারির সময় ছোলা খেলে তাৎক্ষণিক এনার্জি পাওয়া সম্ভব।
* রমজানে টকদইয়ের ব্যাপারটা হচ্ছে পানির যে চাহিদা সেটা সহজে পূরণ করা সম্ভব। এজন্য টকদই এবং ছোলা একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া ভালো।
* যেসব শিশুরা রোজা রাখতে পছন্দ করে। তাই তাদের খাবার তালিকায় অবশ্যই ছোলা রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে রোজার সময় আপনি ছোলার সাথে নুডুলস কিংবা ছোলার সাথে পাস্তা মিশিয়ে দিতে পারেন। ইফতারে এই খাবার খুবই জনপ্রিয়। স্বাভাবিকভাবে আমরা যেমন পাস্তার সাথে নুডুলস রান্না করি। ঠিক একইভাবে এর সঙ্গে শুধু ছোলাটা যোগ করে নিতে হবে। তাহলে বাড়তি পুষ্টি পাওয়া সম্ভব। কারণ নুডুলস ও পাস্তাতে যেমন কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, তেমনি ছোলাতে প্রোটিনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ছোলা থেকে একটি পরিপূর্ণ ভারসাম্য সম্পন্ন ডায়েট পাওয়া সম্ভব।
* অনেকে রমজানে সময় স্বল্পতার কারণে সরাসরি ছোলা সিদ্ধ করে রান্না করেন। এক্ষেত্রে এই পদ্ধতি একদমই ভুল। কারণ ছোলা খাওয়ার সময় অবশ্যই একরাত ভিজিয়ে রেখে সিদ্ধ করতে হবে। কারণ ভিজিয়ে না রেখে সরাসরি সিদ্ধ করে খেলে আপনার শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তাই ছোলা খাওয়ার আগে অবশ্যই পানিতে ভিজিয়ে রেখে রান্না করতে হবে।
* যারা ওজন কমাতে চান কিংবা যারা ওজন কমানোর জন্য ডায়েটে রয়েছেন। তারা রোজার মাসে অবশ্যই ডায়েট করবেন। কারণ এই মাসে ওজনটা যেন না বেড়ে যায়। কারণ রোজার মাসে অনেক সময় না খেয়েও কিন্তু অনেকের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনারা কাঁচা ছোলাটা সিদ্ধ করে খেতে পারেন। কিংবা ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন।
* ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এটিতে যে প্রোটিন রয়েছে এবং আপনার খাবারে যদি উচ্চ প্রোটিন থাকে। তাহলে সেটিও কিন্তু আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ প্রোটিনযুক্ত খাবার আমাদের বাড়তি কিংবা ভাজা খাবার প্রবণতা নষ্ট করে দেয়। এ ছাড়া প্রোটিন সহজে খাবারে তৃপ্তি আনে। তাই তখন অন্যকিছু খেতে ইচ্ছে করে না। সেক্ষেত্রে যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন, তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ছোলা খেতে পারেন।
* ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলা খুব উপকারি। কারণ ছোলা কিন্তু ধীরে ধীরে রক্তে ব্লাডসুগার বৃদ্ধি করে। সেক্ষেত্রে রোজার সময় ডায়াবেটিস রোগীরা ছোলা খেতে পারেন। এজন্য রমজান মাসে খাবার তালিকায় ছোলা রাখতে হবে।