গরমের দিনে চা খান, ওজন কমান!
ঘনিয়ে আসছে গরমকাল। এসময় মানুষ সতেজ থাকার জন্য নানা পানীয় পান করে থাকেন। গরমের সময় অনেকেই চা পান থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু কিছু শীতল উপাদান দিয়ে তৈরি চা শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারে। ক্যাটেচিন নামক ফ্ল্যাভোনয়েডের কারণে চায়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা মেটাবলিজম বাড়ায়। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান রয়েছে। এগুলো ওজন কমাতে এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
১. তরমুজের খোসার চা
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ রায়ংশ ঠাকুর হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ওজন কমানোর জন্য একটি দুর্দান্ত বিকল্প হল তাজা তরমুজের খোসা থেকে তৈরি একটি চা। তরমুজ হলো একটি হাইড্রেটিং ফল যাতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে। এটি ওজন কমানোর জন্য একটি চমৎকার উপায়। বেশিরভাগ মানুষই তরমুজের খোসা ফেলে দেন। কিন্তু এটি আসলে পুষ্টিতে পূর্ণ। একটি সতেজ এবং স্বাস্থ্যকর চা তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।’
· তরমুজের খোসা চা তৈরি করতে প্রথমে খোসাগুলো কেটে ছোট ছোট টুকরো করে নিতে হবে।
· চুলায় পানিসহ একটি পাত্র দিন। তাতে ১০-১৫ মিনিটের জন্য খোসা সিদ্ধ করুন। পানি সামান্য গোলাপী হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। অতিরিক্ত স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য তাজা পুদিনা পাতা যোগ করতে পারেন।
· চা তৈরি হওয়ার পরে, তরমুজের খোসা এবং পুদিনা পাতা ছেঁকে নিন এবং ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা হতে দিন। কিছু বরফকুচি যোগ করে উপভোগ করুন তরমুজ টি।
২. সবুজ চা
গরমের দিনে এই চা আপনার মনকে দেবে শীতল অনুভূতি। সবুজ চায়ে স্বাস্থ্যকর বায়োঅ্যাকটিভ রয়েছে। যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। এই চা চর্বি পোড়াতে পারে। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করতে পারে যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। গ্রিন টি মস্তিষ্ককে বার্ধক্য থেকে রক্ষা করতে পারে। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ কমায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
৩. নীল চা
এর নাম থেকেই বোঝা যায় এটি ক্লিটোরিয়া টারনেটিয়া উদ্ভিদের ফুল থেকে তৈরি। এটি একটি বিশিষ্ট নীল রঙের পানীয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আদিবাসীরা এই চা পান করে থাকেন। এই ঔষধি গুল্মটির সাধারণ নামগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রজাপতি মটর, কর্ডোফান মটর, নীল মটর, অপরাজিতা এবং এশিয়ান কবুতরের ডানা। নীল চা সাম্প্রতিক সময়ে খুবই জনপ্রিয়। ওজন কমানো, শরীরকে ডিটক্সিফাই করা, মনকে প্রশান্ত করা, ত্বকের গঠন সমৃদ্ধ করা এবং চুলের বৃদ্ধির মতো বিস্ময়কর উপকারিতা পাওয়া যায় এই চা পানের মাধ্যমে। প্রাকৃতিকভাবে নীল চা ক্যাফিন-মুক্ত এবং সম্পূর্ণ ভেষজ। তাই এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউস।
৪. ভেষজ চা
ভেষজ চা অনেক ধরনের আছে। এসব চা গরমকালে স্বস্তি দিয়ে থাকে। শরীর ও মনকে ঠান্ডা রাখে। বদহজমের চিকিৎসা করে।
· ক্যামোমাইল চা : এটি মাসিকের ব্যথা কমায়। স্বাভাবিক ঘুমে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
· রুইবোস চা : এটি রক্তচাপ ও সঞ্চালন উন্নত করে। খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। চুল মজবুত করে। ত্বককে সুস্থ রাখে এবং অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়।
· পেপারমিন্ট চা: এতে মেন্থল রয়েছে। এই চা আপনাকে ভিতর থেকে ঠান্ডা অনুভব কমাবে। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে পারে পেপারমিন্ট চা। এই চা মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।
· আদা চা : দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের চিকিৎসার জন্য এই চা ব্যবহার করা যেতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিসের কারণে জয়েন্টের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে।
· হিবিস্কাস চা : এটি রক্তচাপ কমায়। সামগ্রিক লিভারের উন্নতি করে। অস্বাস্থ্যকর মিষ্টির লোভ বন্ধ করতে পারে। কিডনিতে পাথরের গঠন প্রতিরোধ করতে পারে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস