বঙ্গোপসাগরে ঝড়ে ১৮টি ট্রলারডুবি, নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে অভিযান
সুন্দরবনের দুবলার চরের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ দুই জেলের সন্ধানে অভিযান শুরু হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকের আকস্মিক ঝড়ে পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার আটটি বড় ট্রলার এবং বঙ্গোপসাগরের ৬ নম্বর বয়া এলাকায় ১০টি মাঝারি ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় রাত থেকে দুজন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
বনবিভাগের দুবলা শুঁটকি পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় জানান, নিখোঁজ জেলে এবং ডুবে যাওয়া ট্রলার উদ্ধারে আজ শনিবার সকাল থেকে সাগরে অভিযান শুরু করেছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ। সেইসঙ্গে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে দুবলার চরের প্রায় ১০০টি ট্রলার দিয়েও।
প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, ‘সাগরে ডুবে যাওয়া ১৮টি ট্রলারই দুবলার চরের। তবে, নিখোঁজ দুই জেলের পরিচয় জানা যায়নি।’
এদিকে গতকাল রাতে ঝড়-বৃষ্টিতে দুবলার চরের প্রায় দুই কোটি টাকার শুঁটকির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান বন কর্মকর্তা প্রহ্লাদ রায়।
দুবলার চর কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ।
দুবলার চর মূলত জেলে গ্রাম। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ। বর্ষা মৌসুমের ইলিশ শিকারের পর বহু জেলে চার মাসের জন্য কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে ডেরা বেঁধে সাময়িক বসতি গড়েন সেখানে। মেহেরআলীর খাল, আলোরকোল, মাঝেরচর, অফিসকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছাফরাখালী ও শ্যালারচর ইত্যাদি এলাকায় জেলে পল্লী স্থাপিত হয়। এ চার মাস তাঁরা মাছকে শুঁটকি বানাতে ব্যস্ত থাকেন। এখান থেকে আহরিত শুঁটকি চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের পাইকারি বাজারে মজুদ ও বিক্রয় করা হয়।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের সদর দপ্তর বাগেরহাট থেকে মাছ সংগ্রহের পূর্বানুমতিসাপেক্ষে বহরদার ও জেলেরা দুবলার চরে প্রবেশ করে থাকেন। দুবলার চর থেকে সরকার নিয়মিত হারে রাজস্ব পেয়ে থাকে। প্রতি বছর বন বিভাগকে রাজস্ব প্রদান করে মৎস্য ব্যবসায়ীরা সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি পান। এ ছাড়া আহরিত শুঁটকি মাছ পরিমাপ করে নিয়ে ফিরে আসার সময় মাছভেদে প্রদান করেন নির্ধারিত রাজস্ব।